শিরোনামঃ-

» সাপ মারায় নাখোশ মনসা, অলৌকিক ভাবে পুড়ে যাচ্ছে বাড়ি ঘর!

প্রকাশিত: ০৫. মে. ২০১৬ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ সাপ নিয়ে রয়েছে অনেক পৌরাণিক কাহিনী, তেমনি কুসংস্কারও কম নয়। গ্রিক মিথলিজির মেডুসা, রোমান কল্পকাহিনী থেকে শুরু করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মনসা দেবী। তাছাড়া আবার সিনেমা নাটকেও সাপকে দেখানো হয় অনেক অলৌকিক রূপে। হিন্দু সম্প্রদায় সাপকে দেবী হিসাবে পূজা করে। এ সমস্ত লৌকিকতার মধ্যদিয়ে সাপ সম্পর্কে এক ধরনের বিরুপ ধারণা তৈরি হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের মাঝে।

তবে কি সেসব অলৌকিক কাহিনি বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে? সাপ মারাকে কেন্দ্র করে অলৌকিকভাবে বার বার আগুন লাগার ঘটনাসহ নানা অঘটন ঘটে চলেছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা  গ্রামে। এমনটিই দাবি করেছেন ওই গ্রামের আমজনতারা।

তাদের ধারনা, একটি কালকেউটে (গোখরা) সাপ মারাকে কেন্দ্র করে তারা বিপাকে পড়েছেন। সাপটি মারার পর থেকে অলৌকিক ভাবে বাড়িঘরে আগুন লাগছে। ঘটনার পর থেকে আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে  পড়ছে চারিদিকে। আগুনের ভয়ে বাড়ির মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে লোকজন। আগুন নেভানোর জন্য অনেক বাড়িতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পানি। এ ঘটনায়  এলাকায় চরম ভীতি ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

হিজলা গ্রামের সবুর খান জানান, ৮ দিন আগে তার মাছ ধরার জালে একটি কেউটে সাপ ধরা পড়ে। জালসহ সেটিকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় সাপটি মারার জন্য তার শরীরে আঘাত করা হলে ওই বাড়ির এক কিশোরী মাটিতে গড়াতে  থাকে এবং সাপের মত ফণা তুলে সে নাচতে থাকে।

এ সময় সেটিকে পিটিয়ে মারা  হলে কিশোরীটি তার সন্তানকে মারা হয়েছে বলে চিৎকার করতে থাকে। এজন্য  ক্ষমা না চাইলে, কেউ নিস্তার পাবে না বলেও জানায় সে। এরপর থেকে ওই বাড়িতে  শুরু হয় অলৌকিকভাবে আগুন লাগার পালা। প্রতিদিন বাড়ির যেখানে সেখানে অলৌকিকভাবে আগুন লাগছে। এ আগুনে অনেক গাছপালা ও খড়ের পালা পুড়ে ছাই হয়েছে।

গেল ৮ দিনে হিজলা গ্রামের সবুর খান, ইউসুফ খান, সেলিম খান, আসাদ আলী, আলমগীর খান, সোহরাব আলী ও দীন খানের বাড়িতে অলৌকিক ভাবে ১৪-১৫ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন ওইসব বাড়ির লোকজন।

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ওঝাঁ-বৈদ্যের বাড়িতে চলছে দৌড়-ঝাঁপ। এতে ভীতি ও চরম  আতঙ্ক বিরাজ করছে গ্রামবাসীর মধ্যে। পাশাপাশি বিষয়টি ঘিরে জনমনে নানা রহস্যের জন্ম হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত উৎসুক লোকজন খবর পেয়ে ভিড়  জমাচ্ছে ওই গ্রামে। যাদের অধিকাংশই হিন্দু সম্প্রদায়ের নর-নারী।

হিজলা গ্রামের আসাদ আলী জানান, সাপটি মারার পর থেকে নানা অঘটন ঘটছে। প্রতিদিন একাধিকবার হঠাৎ করে যেখানে-সেখানে আগুন লাগছে। গ্রামবাসী ছুটে  এসে আগুন নেভাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে লোকজন চরম আগুন আতঙ্কে আছেন। বাড়ির মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। আর এর থেকে  মুক্তি পেতে বিভিন্ন ওঝাঁ-বৈদ্যের কাছে ছুটছেন তারা।

হিজলা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আজমীর হোসেন জানান, এটি একটি অলৌকিক  ব্যাপার বলে জানতে পেরেছি। একটি সাপ মারাকে কেন্দ্র করে বার বার এ ধরণের  আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে।

চিতলমারী দারুল উলুম মাদরাসার অধ্যক্ষ (বড় হুজুর) মো. আব্দুর রহমান সাহেব জানান, এসব জ্বীনের কারবার বলে মনে হচ্ছে। এব্যাপরে তদবির দেয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক সাধুবাবা জানান, এটা মা মনসার কাজ। সাপ মেরে ফেলার কারণে মা মনসা ক্ষিপ্ত হয়ে এসব অঘটন ঘটাচ্ছে।

চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনোয়ার  পারভেজ জানান, বর্তমানে বিজ্ঞানের যুগে এটি কোন বিশ্বাসযোগ্য বিষয় নয়। এসব আগুন লাগার পেছনে অন্য কি কারণ থাকতে পারে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। তিনি জনগণকে অহেতুক ভীত-সন্ত্রস্ত না হবার পরামর্শ দিয়েছেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১১৭০ বার

Share Button

Callender

April 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930