শিরোনামঃ-

» তালাকনামা জালিয়াতির দায়ে বিশ্বনাথে কাজী গ্রেফতার; ৭ জন আসামীর উপর গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী

প্রকাশিত: ২১. অক্টোবর. ২০১৮ | রবিবার

সিলেট বাংলা নিউজ, বিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ স্বামীর অজ্ঞাতে কনে পক্ষ ভূয়া তালাক তৈরি করে টাকার লোভে জনৈক লন্ডনী বরের সাথে বিবাহ সম্পাদনের অপচেষ্টা। বর পক্ষ এ খবর জানার পর সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন।

আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই’কে দায়িত্ব দিলে, পিবিআই উক্ত ঘটনার সত্যতা পায় এবং আদালত তা আমলে নিয়ে বর পক্ষের দায়ের করা মামলায় আসামীদের উপর গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে। একপর্যায়ে উপরোক্ত বিবাহ সম্পাদনের চেষ্টার দায়ে কাজী দেলোয়ার হোসেনকে আটক করা হয়।

শনিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধায় বিশ্বনাথের পুরানবাজার এলাকা থেকে বিশ্বনাথ থানার এসআই তালেব আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ আসামী কাজী দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে।

বরপক্ষ কর্তৃক কনে সহ ৮ জনকে আসামী করে ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- বিশ্বনাথ সি.আর ১৩৩/২০১৮।

উক্ত মামলায় আসামী করা হয়- (১) হেপি বেগম, (২) রুমেল মিয়া, (৩) জুয়েল মিয়া, (৪) লিটন মিয়া, (৫) সুয়েব আলী, (৬) কাজী দেলোয়ার হোসেন, (৭) মুকিতুর রহমান ও (৮) আব্দুল খালিক।

জানা যায়, বরের সাথে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার মিরপুর ইউনিয়নের আটঘর গ্রামের মো. আকিক মিয়ার কন্যা হেপি বেগমের পূর্ব পরিচয় ও আলাপ-আলোচনার সুবাদে বিগত ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখে তাদের মধ্যে বিবাহ কার্য সম্পন্ন হয়। যাহার রেজিস্ট্রারী নং- ৩৫/২০১৫। বিবাহ কার্য সম্পাদন করান কাজী মো. আসাদ উদ্দিন। ঠিকানা- ৭নং দেওকলস, ইউ/পি কাজি অফিস, কালিগঞ্জ বাজার, বিশ্বনাথ, সিলেট।

এমতাবস্থায় কনে হেপি বেগম পিত্রালয়ে গিয়ে বিগত ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে বরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। বাদিপক্ষ সহ বাদিপক্ষের আত্নীয়-স্বজন কনে হেপি বেগমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কনে পক্ষ অর্থাৎ বিবাদি পক্ষ যোগাযোগের জন্য অপারগতা প্রকাশ করেন।

উপরোক্ত ২নং থেকে ৪নং আসামীর প্ররোচনায় ১নং আসামী হেপি বেগমকে ফুসলিয়ে লন্ডনের লোভ দেখিয়ে লন্ডন প্রবাসী ৫নং আসামী সুয়েব আলীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জোরপূর্বক হীন চেষ্টা করছিল।

এমতাবস্থায় অত্র বাদি গোপনে তাঁর মোবাইল থেকে স্ত্রী হেপি বেগমের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁর স্ত্রী জানান যে, উপরোক্ত ২নং থেকে ৪নং আসামীগণ তাঁর প্রতি বিভিন্ন শারিরীক, মানষিক নির্যাতন করে এবং পূর্ববর্তী বিয়েকে অস্বীকার করে জোরপূর্বক অত্র ৪নং আসামী লিটন মিয়ার সহযোগীতায় ৫নং আসামী প্রবাসী সুয়েব আলীর সাথে বিবাহ দেয়ার পাঁয়তারা করছিল।

উক্ত বিষয়গুলো বাদি বুঝতে পেরে তাঁর ভবিষ্যত চিন্তা করে বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী নথিভুক্ত করেছেন। যার সূত্র নং- বিশ্বনাথ থানার সাধারণ ডায়েরী নং- ১১৬৪/১৮, তারিখ- ২৩/০৩/২০১৮।

১নং আসামী হেপি বেগমের সাথে বাদির যে বিবাহ হয়েছিল, তার তালাক সম্পাদনের নামে অপরাপর আসামীদের সহযোগীতায় বিগত ২০১৮ সালের ২৭ মার্চ তারিখে একটি ভূয়া তালাকনামা তৈরি করে। বাদিপক্ষ ভূয়া তালাকনামা জানার পর ভূয়া তালাকনামা দিয়ে ১নং থেকে ৮নং আসামীর উপর সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে একটি সি.আর মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- বিশ্বনাথ সি.আর ১৩৩/২০১৮।

আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই’কে দায়িত্ব দিলে, পিবিআই তদন্ত করে আসামীগণের বিরুদ্ধে জাল তালাকনামা প্রমাণিত হয় এবং জাল তালাকনামা প্রকাশ করার দায়ে আসামীগণের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪৬৮/৪৭১ ধারায় প্রাথমিকভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। ঐ রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত তা আমলে নিয়ে উপরোক্ত ১নং থেকে ৮নং আসামীগণের উপর গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৬০৭৮ বার

Share Button

Callender

June 2023
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930