শিরোনামঃ-

» ‘এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন’ উপলক্ষে সিলেটে নৌ-সমাবেশ

প্রকাশিত: ০৭. নভেম্বর. ২০২৪ | বৃহস্পতিবার

ডেস্ক নিউজঃ

বাংলাদেশে গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে ‘এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন’ উপলক্ষে সিলেটে নৌ-সমাবেশে করেছে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেট, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে সিলেট নগরীর কাজিরবাজার ব্রিজের দক্ষিণ অংশে সুরমা নদী তীরে এই নৌ-সমাবেশ করা হয়। নৌ-সমাবেশে বক্তারা পৃথিবীর অস্তিত্বের স্বার্থেই জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের সম্প্রসারণ বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানী খাতে বিনিয়োগের আহবান জানান।

সমাবেশে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, উন্নত দেশসমূহ অতি মুনাফা লাভে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে বায়ুমণ্ডলে মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিগর্মনের মাধ্যমে জলবায়ু ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে থাকা অনুন্নত দেশগুলোকে অস্তিত্ব সংকটে ফেলছে। আবার ঝুঁকিতে থাকা এসব অনুন্নত দেশে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে অর্থ, প্রযুক্তি ও কাঁচামাল জোগান দিচ্ছে উন্নত তথা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে শীর্ষ দেশগুলা। আমরা যতদিন পর্যন্ত এ শৃঙ্খল থেকে বের হতে না পারবো ততদিন পর্যন্ত আমাদের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন; হুমকিতে থাকবে পুরো পৃথিবী নামক গ্রহ।

এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন জীবাশ্ম জ্বালানির, বিশেষত প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজির প্রকল্পের সম্প্রসারণ এবং অর্থায়নের বিরোধিতা করে আয়োজকদের পক্ষে সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরা সিলেটের সদস্য সচিব আবদুল করিম কিম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে যা পরিবেশের ক্ষতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসমূহ, যেগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ, ইতোমধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, চরম আবহাওয়া এবং জীববৈচিত্র্য ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে একটি ন্যায্য, টেকসই, এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভিত্তিতে উন্নতির দিকে ধাবিত করার দাবি জানানো হবে।

ধরা সিলেটের আহ্বায়ক ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী সভাপতির বক্তব্যে গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে এশিয়া ডে অব অ্যাকশন-এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধি: পরিবেশ, স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ওপর গ্যাস ও এলএনজির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং অংশীজনদের সচেতন করা। নীতিনির্ধারণে পরিবর্তন আনা: সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং নীতিনির্ধারকদের জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের সম্প্রসারণ বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানানো। নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রচার: গ্যাসের পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের উপকারিতা তুলে ধরা। সামাজিক এবং পরিবেশগত ক্ষতি তুলে ধরা: জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর প্রভাব বিশেষত এলএনজি টার্মিনাল ও গ্যাস বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকার মানুষের ওপর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি।

কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ফকরুজ্জামান ফখরুল, সাংবাদিক উজ্জ্বল মেহেদী, রেজাউল কিবরিয়া, রোমেনা বেগম রোজি, ডা. এনামুল হক, মোতাহের হোসেন সোহেল, নিগাত সাদিয়া, কালাম জুবায়ের নিশাত, শাহিন আহমেদ সিদ্দিকী, সুপ্রজিৎ তালুকদার, সোহাগ তাজুল আমিন, প্রকৌশলী মুস্তাসার চৌধুরী, সাংবাদিক শাকিলা ববি, আহমদ আল নাহিয়ান, শামসুল আলম জাকারিয়া প্রমুখ। এছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই নৌ সমাবেশে অংশগ্রহন করেন।

এশিয়ান ডে অব একশন উপলক্ষে আজ বাংলাদেশের আটটি জেলার ১৫টি স্থানে নদীতে বিক্ষোভের আয়োজন করা হচ্ছে। বিভিন্ন রঙের ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ডসহ নৌকায় জড়ো হয়ে এই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উদ্ভূত দূষণ ও পরিবেশগত ক্ষতির প্রতিবাদ জানান। নদীতে এই বিক্ষোভের উদ্দেশ্য জলাশয়, বাস্তুতন্ত্র এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে প্রতিফলিত করা।

বিক্ষোভের সময় প্রদর্শিত স্লোগান এবং দাবিসমূহ হচ্ছে- গ্যাস সম্প্রসারণ বন্ধ করা, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং এলএনজি প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করা, গ্যাস নয়, সমাধান হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জীবাশ্ম জ্বালানির দ্রুত, ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত ফেজ-আউট, কয়লা থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর, জীবাশ্ম গ্যাস পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর ইত্যাদি।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১৯ বার

Share Button

Callender

December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031