» আ.লীগ না করেও যে কারণে মনোনয়ন পেলেন সুবর্ণা মোস্তফা

প্রকাশিত: ০৯. ফেব্রুয়ারি. ২০১৯ | শনিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ ঘটনাটি ১৯৮০ সালের। জিয়াউর রহমান ও তাঁর বিএনপি ক্ষমতায়।

২৬ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য একটি মুক্তিযুদ্ধের নাটক নির্মাণ হবে। নাটকটির প্রযোজক ছিলেন প্রয়াত জিয়া আনসারী।

নাটকটিতে অভিনয়ের জন্য সুবর্ণা মোস্তফাকে ডাকা হয়। তখন সুবর্ণা মোস্তফা যে কতোটা জনপ্রিয় ছিলেন, নতুন করে বলার দরকার নেই।

নাটক ও সিনেমার খুবই জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি। জনপ্রিয়, হার্টথ্রুব অপ্রতিদ্বন্ধী যাই বলেন সব খ্যাতিই তখন তাঁর ছিল।

তাঁর সঙ্গে নাটকটিতে অভিনয়ের কথা প্রয়াত হুমায়ূন ফরিদীর। তাকেও ডাকা হয় মিটিংয়ের জন্য।

নাটকটির গল্পটি ছিলে এমন, সুবর্ণার প্রেমিকা মুক্তিযুদ্ধে যাচ্ছেন। তখন সুবর্ণার সংলাপ প্রেমিকার উদ্দেশ্যে, ‘জিয়া আমাদের নেতা।

তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। তুমি যুদ্ধে যাও। দেশকে স্বাধীন করো। সুবর্ণা মুস্তফা এই সংলাপ বলতে অস্বীকৃতি জানালেন।

প্রযোজকের মুখের উপর বললেন, ‘জিয়াউর রহমান কখনো আমাদের নেতা ছিলেন না। এরকম ইতিহাস বিকৃতির নাটক সুবর্ণা মোস্তফা করে না।

তাৎক্ষনিক ওইমুহুর্তে টেলিভিশন থেকে বের হয়ে আসেন সুবর্ণা মোস্তফা।

তিনি কিন্তু সবসময়ই এরকম। তার স্ক্রিপ্ট পছন্দ না হলে নাটকটি কে নির্মাণ করলো সেটা ভাবেন না। স্ক্রিপ্ট ছুড়ে মারেন মুখের উপর।

তিনি কখনো ভালো কাজের সঙ্গে আপোষ করেন না। সেটা যত ক্ষমতাধরেরই নাটক হোক না কেন। এরকম সুখ্যাতি রয়েছে তাঁর।

এরপরের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৮৪ সালে। স্বৈরশাসক এরশাদ ক্ষমতায়। বিজয় দিবসের নাটক নির্মাণ হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য।

বরকতউল্লাহ ছিলেন এর প্রযোজক। রাইসুল ইসলাম আসাদ ছিলেন সুবর্ণার বিপরীতে। নাটকটির একটা সংলাপে বলতে হবে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’। যখন সেটা তার চোখে পড়ে। একমূহুর্ত অপেক্ষা না করে নাটকটি করতে অস্বীকৃতি জানান। সরাসরি বলে দেন, ‘যেদিন জয়বাংলা বলে মুক্তিযুদ্ধের নাটক করতে পারবেন। সেদিন আমাকে ডাকবেন।

এমন ঘটনাগুলো বিভিন্নভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কানে যায়। সুবর্ণা মোস্তফা কখনো আওয়ামী লীগের জন্য কখনো পথে নামেননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যাপারে তাঁর ছিল দৃঢ় অবস্থান। তা প্রধানমন্ত্রীর ভালো করেই জানা।

রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও এমন মানুষকে প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই শ্রদ্ধার চোখে দেখেন।

শুক্রবার নাম ঘোষণার পরে যখন প্রশ্ন আসে সুবর্ণা মোস্তফা কবে আওয়ামী লীগ করেছেন। তখন প্রধানমন্ত্রী তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আওয়ামী লীগ করার দরকার নেই। তখন তিনি এই ঘটনা দু’টির উদাহরণ দেন।

উদাহরণ দিয়ে বলেন, যারা ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তাদের সবসময়ই আমি মূল্যায়ন করি।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৬৭৪ বার

Share Button

Callender

March 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31