শিরোনামঃ-

» অভিযানে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত গরুর মাংস! জরিমানা!!

প্রকাশিত: ২৮. এপ্রিল. ২০১৬ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজঃ পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রন আইন ২০১১ এর অধীনে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মো. শরীফুজ্জামানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানকালে বিশেষজ্ঞ মতামত ও প্রাথমিক পরীক্ষার জন্য উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি অফিসার ডাক্তার মোহাম্মদ মাহবুব আলম।

বেলা ১১টায় প্রথমেই সিলেট মহানগরীর পূর্ব জিন্দাবাজার বারুতখানা ব্র্যান্ড সপ ‘স্বপ্ন’তে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানকালে দেখা যায় স্বপ্ন-এ রাখা মাংসতে কোন সিল নেই, ডাক্তার দ্বারাও তা পরীক্ষিত নয়।

এ সময় ডাক্তার মোহাম্মদ মাহবুব আলম ‘স্বপ্ন’তে বিক্রির জন্য রাখা গরুর কলিজা  প্রাথমিক পরীক্ষা করার পর তা খাবারের অনুপোযোগী থাকায় জব্ধ করে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য স্থানীয় ল্যাবরেটরীতে প্রেরণ করেন।

মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে ‘স্বপ্ন’র বারুতখানা শাখার ম্যানেজার সুলতানা বেগম মাংস বিক্রির লাইসেন্সও দেখাতে পারেননি।

এসময় বারুতখানা স্বপ্ন’কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

‘স্বপ্ন’ এর বারুতখানা শাখার ম্যানেজার সুলতানা বেগম মোবাইল কোর্টকে জানান, বন্দরবাজার সংলগ্ন সন্ধ্যাবাজারের ভাই ভাই মাংসের দোকান থেকে তাদেরকে মাংস সরবরাহ করা হয়।

এই মাংস ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষিত কি-না তা তাদের জানা নেই বলেও তিনি স্বীকারোক্তি দেন। মোবাইল কোর্ট পরবর্তীতে সন্ধ্যাবাজারে গিয়ে ‘স্বপ্ন’ থেকে প্রাপ্ত স্লিপ দেখালে তারা (ভাই ভাই মাংসের দোকান) স্বীকার করেন যে, তারা ‘স্বপ্ন’তে মাংস সরবরাহ করে থাকেন এবং তারা স্বীকারোক্তি দেন যে, তাদের সরবরাহকৃত মাংস কোন ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করা হয়নি বা কোন সিলও দেওয়া হয়নি।

অভিযানকালে মোবাইল কোর্ট দেখতে পান যে, ভাই ভাই মাংসের দোকানের মাংস বিক্রির কোন লাইসেন্স নেই।

এসময় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোহাম্মদ মাহবুব আলম ভাই ভাই মাংসের দোকানের কসাইখানা পরিদর্শন করেন এবং সেখানে একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক বাছুর পেয়ে তা জব্ধ করে নিজ জিম্মায় নেন।

মোবাইল কোর্ট ভাই ভাই মাংসের দোকান কর্র্তৃপক্ষকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

পরবর্তীতে মোবাইল কোর্ট মিরাবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় মিরাবাজারের মোহাম্মদী খাসির দোকানের পাশের খাসির দোকানে (সাইনবোর্ড বিহীন) ২টি অপ্রাপ্তবয়স্ক (২ মাস বয়সী) ছাগলের বাচ্চা দেখতে পেয়ে ডাক্তার মোহাম্মদ মাহবুব আলম তা জব্দ করে জিম্মায় দেন।

এই অভিযানের পর শিবগঞ্জের বংগাই মিয়ার মাংসের দোকানে অভিযান চালায় মোবাইল কোর্ট। সেখানে গিয়ে মাংস ও কলিজা পরীক্ষা করার পর ডাক্তার মোহাম্মদ মাহবুব আলম নিশ্চিত হন সেখানে লিভার সিরোসিস-রোগে আক্রান্ত গরুর মাংস ও কলিজা বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।

এ সময় বংগাই মিয়ার মাংসের দোকান কর্তৃপক্ষ জানান ‘এগুলো (লিভার সিরোসিস-রোগে আক্রান্ত গরুর মাংস ও কলিজা) হোটেলে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।’

‘হোটেলে যারা খাবে তারাও মানুষ’-এই প্রশ্নের জবাবে নিরুত্তর থাকে বংগাই মিয়ার মাংসের দোকান কর্তৃপক্ষ।

ডাক্তার মোহাম্মদ মাহবুব আলম মাংস ও কলিজা পরবর্তী পরীক্ষা নিরীক্সার জন্য স্থানীয় ল্যাবরেটরীতে প্রেরণের জন্য তা জব্দ করেন। এসময় বংগাই মিয়ার মাংসের দোকান কর্তৃপক্ষকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এই ব্যাপারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মো. শরীফুজ্জামান জানান, খাবারের মান নিয়ন্ত্রন এবং জনস্বার্থে পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রন আইন ২০১১ এর অধীনে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং এখন থেকে তা নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে।

অভিযানকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ফোর্স এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৬২১ বার

Share Button

Callender

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031