শিরোনামঃ-

» নাট্য চর্চার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনাবলী প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে হবে : এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম

প্রকাশিত: ৩১. মার্চ. ২০২১ | বুধবার

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, নাটকের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময় মানুষের কাছে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার ও সমাজকে নতুন আশার সঞ্চার করতে নাট্যকর্মীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। বর্তমান সময়েও এই ধারা অব্যাহত রেখে নাট্যকর্মীদের উপস্থাপনা অত্যন্ত সময়োপযী। তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতার ইতিহাস ও দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে হবে নাটকের মধ্য দিয়ে।

বুধবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় রিকাবীবাজার কবি নজরুল অডিটোরিয়াম মঞ্চে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট আয়োজিত একুশের আলোকে নাট্য প্রদর্শনীর সমাপনী সন্ধ্যায় নাটক মঞ্চায়ন শেষে জেলা প্রশাসক প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো তুলে ধরেন।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় ২ মাসব্যাপী একুশের আলোকে নাট্য প্রদর্শনীর সমাপনী সন্ধ্যায় নাটক মঞ্চায়ন করে নাট্যমঞ্চ সিলেট। কাজী মাহমুদুর রহমান রচনায় ও রজত কান্তি গুপ্তের নির্দেশনায় বধ্যভূমিতে শেষদৃশ্য নাটকটি পিনপতন নিরবতায় উপভোগ করেন সিলেটের নাটকপ্রিয় দর্শক।

সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত সংখ্যক দর্শকদের উপস্থিতিতে নাটক মঞ্চায়ন শেষে সমাপনী আয়োজনে মঞ্চে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পরিতোষ কান্তি ঘোষ, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শামসুল আলম সেলিম। নাট্য পরিষদের সহ সভাপতি উজ্জল দাসের পরিচালনায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু।

এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সুপ্রিয় দেব শান্ত, কোষাধ্যক্ষ ইন্দ্রানী সেন শম্পা, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক অচিন্ত দে ও নির্বাহী সদস্য ফারজানা সুমী প্রমুখ। বধ্যভূমিতে শেষদৃশ্য নাটকটি মঞ্চায়ন শেষে অতিথিবৃন্দ নাট্যমঞ্চকে উৎসব স্মারক ও উত্তরীয় প্রদান করেন।

নাটকটিতে একাত্তরে যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশের শত শহস্ত্র বধ্যভূমির কথা বলা হয়েছে। নাটকে গল্লামারী বধ্যভূমির নিঃশংসতার চিত্র ফুটে উঠেছে। যা নিরস্ত্র মুক্তিকামী বাঙালীর উপর পাকিস্থানীদের বর্বরতার একটি চিত্র। কাহিনীর চরিত্র কিংবা পাত্রপাত্রি শুধুমাত্র কল্পনা বিলাসের জন্য নয়, ওরা ছিল একাত্তরের যুদ্ধ সময়ের ঘটনার প্রতিচ্ছবি। নাটকে বর্বর পাকসেনারা কিভাবে নির্যাতন চালিয়ে কয়েকজন মানুষের স্বপ্ন ও মুক্তির চিন্তাকে হত্যা করে তা ফুটে উঠেছে। নাটকে নিঃশংসতায় অন্ধ বন্দি জয় বাংলাকে বুকে ধারণ করে স্বপ্নের স্বদেশের কথা মনে করে। সুজা অন্য বন্দিদের মাঝে খুঁজে পায় তার স্বপ্নের মেয়েটিকে। যাকে সে বিদেশে থাকাকালীন সময়ে মায়ের পাঠানো ছবিতে দেখেছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিণতি গল্লামারী বধ্যভূমিতে তার স্বপ্নের সেই মেয়েটি তাঁর কাছে অন্যদের মতই বন্দি, সে তাকে দেখতে পারছে না। বন্দি মেয়েটিকে তাঁর স্বপ্ন আর মেয়েটি নিয়ে মায়ের পাঠানো ছবির কল্পনার কথা বলতে গিয়ে শেষ মূহুর্তে জানতে পারে তাঁর সমস্ত ভালবাসা, বন্দি মেয়েটিকে নিয়ে। পাকিস্থানি সুবেদারের কুট কৌশলে নাটকের এক পর্যায়ে সকল বন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়, এই বলে যদি বন্দি সুজা নিজের হাতে তার স্বপ্নের মেয়েটিকে হত্যা করে। সুজা শর্তে রাজি না হলেও মেয়েটি তার জীবনের লজ্জা, ঘৃণা ও অপমানের কথা সুজাকে স্মরণ করিয়ে দেয় এবং বলে সে এই নরপশু নয়, সুজার হাতেই নিজের জীবনের মুক্তি চায়। শেষ দৃশ্যে সুজা পাকিস্থানি সুবেদারের কুট কৌশলের প্রতিশোধ নেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অন্যান্য বর্বর পাকসেনারা সুজা সহ সকলকেই হত্যা করে গল্লামারিতে। এরকম মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভয়াবহ দিনগুলোকে ‘বধ্যভূমিতে শেষ দৃশ্য’ নাটকের মধ্য দিয়ে স্মরণ করিয়ে দেয়।

নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন, রজত কান্তি গুপ্ত, বাপ্পী মজুমদার, বর্ণা ব্যানার্জি, সাহিদা বিনতে হাসান, রিজান আহমদ রুমেল, মেহেদী হাসান, রুকন উদ্দিন, আমিনুর রহমান রুহিত, আবু জাহিদ ভূঁইয়া, কাওছার আহমদ, মৌমি আক্তার, মিনাক্ষী গুপ্তা, জাহেদ, বিলাস, রামানুজ গুপ্ত, রক্তিম গুপ্ত প্রমুখ শিল্পীরা।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ২১১ বার

Share Button

Callender

June 2023
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930