শিরোনামঃ-

» শত চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারলো না স্ত্রী তাঁর স্বামীকে

প্রকাশিত: ২৭. জুন. ২০১৯ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ

আমার সামনেই সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি শত চেষ্টা করেও তাকে রক্ষা করতে পারিনি। হামলার সময় কোন লোক এগিয়ে আসেনি।’ এভাবেই কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনা পুলিশ লাইনের কাছে বাবার বাড়িতে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।

মিন্নি বলেন, ‘বিয়ের আগে থেকেই নয়ন আমাকে বিরক্ত করত। তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে হবে, কথা না বললে মেরে ফেলবে, রাস্তাঘাটে আমার রিকশায় জোর করে উঠবে, এসব কথা কাউকে বললে মেরে ফেলবে বলে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল। এর পর বিষয়টি পরিবারকে জানালে রিফাতের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তবে বিয়ের আগ থেকেই রিফাতের সঙ্গে আমার ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল।’

তিনি বলেন, ‘বিয়ের পরও নয়ন বন্ড আমাকে বিরক্ত করে আসছিল। বিষয়টি আমি আমার স্বামীকেও জানিয়েছিলাম।

(বুধবার, ২৬ জুন) সকালে আমি রিফাতের সঙ্গে কলেজে গিয়েছিলাম। কলেজের গেটে ওঁৎ পেতে থাকা কিছু সন্ত্রাসী এ সময় রিফাতকে কলেজ গেট থেকে টেনে নিয়ে নয়ন বন্ড ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের কাছে নিয়ে যায়।

এ সময় তাদের মধ্য থেকে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজি নামের দু’জন আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। আমি আমার স্বামীকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করি। কিন্তু এ সময় উপস্থিত সেখানে অনেকেই অস্ত্রের ভয়ে আমাদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি।’

রিফাত হত্যার বিচার ও খুনিদের সাজার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে মিন্নি বলেন, দোষীদের যাতে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়, এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামরা করি। নয়ন, রিফাত ফরাজি ও রিশান ফরাজির ফাঁসি কামনা করি।’

এলাকাবাসী সূত্রে ও সিসিটিভি ক্যামেরায় ঘটনার ফুটেজে দেখা গেছে, বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা রাম দা নিয়ে রিফাতের ওপর চড়াও হয়। এ সময় মিন্নি তাদের বাধা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু তার বাধা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা রিফাতকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে বারবার আত্মরক্ষার চেষ্টা চালান রিফাত। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। সন্ত্রাসীরা তার হাত-পা, বুক, পিঠসহ সারা শরীর কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মিন্নি এ সময় একবার সন্ত্রাসী নয়নকে, আরেকবার নয়নের সহযোগী দুর্বৃত্ত রিফাত ফরাজীকে আটকানোর চেষ্টা করেন এবং ‘বাঁচাও, বাঁচাও’, ‘না, না’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু ততক্ষণে রাম দার কোপে মারাত্মক আহত হন রিফাত। এর পর তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকালে রিফাত শরীফ মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল ৯টার দিকে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা ব্যক্তির নাম চন্দন। সে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

নিহত রিফাত শরিফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল হালিম দুলাল শরিফ। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে রিফাত।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৭৮ বার

Share Button

Callender

April 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930