শিরোনামঃ-

» মেহেদী হত্যার পর পুলিশ কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় সরকার যেভাবে খুনিকে গ্রেফতার করলেন

প্রকাশিত: ২৯. মার্চ. ২০১৮ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মেহেদী আল সালাম গত ২৬ মার্চ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে সিলেট নগরীর ক্বীনব্রীজ এলাকায় খুন হন।

এই ঘটনায় মেহেদরি পরিবার, শাবি সহ সিলেট জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। ঘটনাটি সম্পূর্ণ ক্লু-লেস হবার কারনে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে-একটি মেধাবী তরুণ এভাবে হারিয়ে যাবে আর তার ঘাতকরা আইনের আওতায় আসবেনা?

অন্যদিকে এই ঘটনা সিলেটের পুলিশ প্রশাসকে বিচলিত করে তোলে। তারা এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহন করে। দায়িত্ব নেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (দক্ষিণ-ক্রাইম) জ্যোতির্ময় সরকার।

তাঁর নেতৃত্বে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খায়রুল ফজল ও এসআই রিপন দাস সহ প্রমুখকে নিয়ে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। ক্লু-লেস মামলায় তিনি ক্লু খুজতে শুরু করেন।

প্রথমে তিনি তার সহকর্মীদের নিয়ে নিহত মেহেদি এর ভাড়াকৃত রিক্সাচালককে খোঁজতে থাকেন। সমস্ত জায়গায় তন্ন তন্ন করে খুঁজে ।

কোন সুরাহ্ তারা পাচ্ছিলেন না। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলের একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মোবাইল ফোনে শুধুমাত্র রিক্সার একটি ছবি পান।তারা ছবিটি পেয়ে কিছুটা আশার আলো দেখেন। সহকারী পুলিশ সুপার জাকারিয়া মুহাম্মদ বলেন-মেডিকেল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে খুন হওয়া ব্যক্তির চোখ কেন খোলা থাকে তার অনেক রকম ব্যাখ্যাই দেয়া যায়।

এ ব্যাপারে পুলিশের ব্যাখ্যা হল:

খুন হওয়ার পরও মৃত ব্যাক্তির লাশটি পুলিশের প্রতীক্ষায়ই চোখ খুলে তাকিয়ে থাকে। কারন, ফার্স্ট রেসপন্ডার হিসেবে পুলিশ তার লাশের কাছে পৌঁছানোর পর সে পুলিশের চোখে চোখ রেখে বলতে চায়-

“আমাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে, আপনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি পারেন আমার খুনিকে খুজে বের করতে, প্লিজ সঠিকভাবে ইনভেস্টিগেশন শেষ করে ন্যায় বিচারের ব্যবস্থা করুন”।

নিহত ব্যক্তির এ রকম আকুতি যদি নিজ ভার্সিটির জুনিয়র হয়, তাহলে বিষয়টা কতটা মর্মাহত করবে একজন মানুষকে। বলতে পারেন? হয়তো নিরবে দাঁত কামড়ে কাঁদবে।

শুধুমাত্র একটি রিক্সার ছবি দিয়ে কি আদৌ মূল ঘটনা উদ্ঘাটন হবে? ভেবে দেখুন নগরীতে কত হাজার রিক্সা। তবুও পুলিশের লক্ষ্য পৌঁছানোর দারুণ প্রয়াস। বিভিন্ন জায়গায় রিক্সা ও চালকে খুঁজতে থাকেন তারা ।

এসএমপি’র সুদক্ষ, চৌকষ ও মেধাবী এই পুলিশ কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় সরকার (শাবিপ্রবি’র সাবেক ছাত্র) ইতিপূর্বে অনেক ক্লু-লেস মামলা উদ্ঘাটন ও চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার সহ ছিনতাইকারী গ্রেফতার করে ভূয়সী প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন তিনি।

তাই মেহেদি হত্যা মামলার বিষয়ে হাল ছাড়তে নারাজ। অক্লান্ত পরিশ্রমের একপর্যায়ে তিনি রিক্সা ও চালককে আটক করতে সক্ষম হন। রিক্সা চালকের বাড়ী দিনাজপুর। রিক্সা চালকের দেয়া তথ্য ও বিবরণ অনুযায়ী নগরীর ভার্থখলা থেকে প্রথমে দুজন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- ছিনতাইকারী- র্মীজা আতিক ও তোফায়েল মুহাম্মদ রিপন।

ছিনতাইকারী র্মীজা আতিক মেহেদি আল সালাম হত্যার কথা স্বীকার করে আদালত ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছে।

তার ভাষ্যমতে- মূলত ছিনতাই কাজে বাধা প্রদান করার কারনে মেহেদি কে হত্যা করা হয়েছে। ছিনতাই কাজে মোট ৪ জন অংশ নিয়েছিল। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে বাকি ২ জনকে আটক করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫৩১ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031