শিরোনামঃ-

» শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর তীর জুড়ে মাছের মেলা

প্রকাশিত: ১৩. জানুয়ারি. ২০১৭ | শুক্রবার

আতাউর রহমান কাওছার, ওসমানীনগর প্রতিনিধিঃ বাঙালির সংস্কৃতিতে বারো মাসে তেরো পার্বনের একটি পার্বন হলো পৌষ সংক্রান্তি মূলত: অগ্রাহায়ণের ধান কাটার পর থেকে শুরু হয় নবান্ন উৎসব।

প্রকৃতিনির্ভর অনেক পার্বন আজ বিলুপ্ত হলেও দেশের বিভিন্নস্থানে এখনো পৌষ সংক্রান্তিকে ঘিরে আয়োজন হয় মাছের মেলা।

প্রায় ২০০ বছর পূর্বে মৌলভীবাজারের শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর তীর জুড়ে শুরু হয়েছিল মাছের মেলা।

বৃহস্পতিবার থেকে ২ দিনব্যাপী এই মেলা শুরু হয়েছে। এ মেলা চলবে শুক্রবার  গভীর রাত পর্যন্ত।  ২ দিনব্যাপী  মেলায় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার মাছ বেচা-কেনা হবে বলে আশাবাদী আয়োজকরা।

মাছের মেলাটি এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। মেলাস্থল শেরপুর হলো মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার একেবারে শেষভাগে। পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা উত্তরে কুশিয়ারা নদী।

নদী পাড় হলেই সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলা শুরু। হবিগঞ্জ, সিলেট ও মৌলভীবাজার এই ৩টি জেলার মোহনা হচ্ছে শেরপুর। মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবী অনুযায়ী দেশের সবচেয়ে বড় মাছের মেলা হলো এটি।

এটি যদিও মাছের মেলা নামে পরিচিত তথাপি মাছ ছাড়াও বিভিন্ন পসরার কয়েক হাজার দোকান বসেছে কুশিয়ারার তীর জুড়ে।

এলাকার বয়োবৃদ্ধ অনেকেই মেলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেছেন, সেই ছোটবেলা থেকে এই মাছের মেলা দেখে আসছেন। তবে কিভাবে মেলা শুরু হয়েছিলো। তাদের কেউই সঠিক ইতিহাস জানেন না।

আগে এই মাছের মেলায় স্থানীয় বিভিন্ন হাওর-বাওরের, নদ-নদীর মাছ নিয়ে আসতো জেলেরা। এখন মৎস্য খামারগুলোর মাছতো আসেই। আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীদের বিরাট বিরাট চালান।

সিলেটের কুশিয়ারা নদী, সুরমা নদী, মনু নদী, হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, কাওয়াদিঘি হাওর, হাইল হাওরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা বাঘ, রুই, কাতলা, বোয়াল, গজার, আইড়সহ বিশাল বিশাল মাছ নিয়ে এসেছেন।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছের মেলায় ৫ হাজার টাকা মূল্যের কমে চাহিদার মাছ কেনা যায় না। কারণ মাছের মেলা বলে কথা। বড় ব্যবসায়ীরা সপ্তাহখানেক পূর্বে বড় বড় মাছ সংগ্রহ করতে থাকেন। সেই অনুযায়ী মাছের দাম ও হাঁকা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে আড়ত থেকে ছোট বড় অনেক জাতের মাছ নিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েন।

এছাড়া মেলা উপলক্ষে শেরপুর, নবিগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ আশেপাশের গ্রামের প্রবাসীরা প্রতিবছর মেলার জন্য দেশে এসে থাকেন।

বর্তমানে এই মেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, মুসলিম সহ সব ধর্মের মানুষের জন্য মিলনমেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৬০৯ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031