শিরোনামঃ-

» প্রসূতি নিরাময়ে দেশের ২য় স্থান অর্জন করলো জৈন্তাপুরের চারিকাটা পরিবার ও স্বাস্থ্য ক্লিনিক

প্রকাশিত: ১২. ডিসেম্বর. ২০১৬ | সোমবার

আল মাসুম, জৈন্তাপুর প্রতিনিধি:: সিলেট জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র স্বাস্থ্যসেবায় সিলেটে জেলার মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন এবং বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে।

জৈন্তাপুর উপজেলার অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন চারিকাটা। এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা ছিল নাজুক। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উপজেলার এই ইউনিয়নের বসবাসকারী জনসাধারণকে প্রসূতি নিয়ে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এর ফলে মাতৃমৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি ছিল এই ইউনিয়নে।

চারিকাটায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র স্থাপন করা হলেও প্রথমদিকে কেন্দ্রটি নানা কারণে অকার্যকর ছিল। ছিল না বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়মের কারণে কেন্দ্রটি ছিল দুর্বল থাকায় সেখানে কার্যক্রম চালু ছিল না।

২০১৫ সালের জুলাই হতে নভেম্বর পর্যন্ত অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মোটরের মাধ্যমে পানির ব্যবস্থাকরণ, বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান মমতা প্রকল্পের অর্থায়নে কেন্দ্রটিকে জনসেবার উপযোগী করে তোলা হয়।

গত বছরের ১ ডিসেম্বর হতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, মমতা প্রকল্প এবং এফআইভিডিবির যৌথ উদ্যোগ্যে চারিকাটা ইউনিয়ন কেন্দ্রে প্রসূতি কার্যক্রম চালু করা হয়। শুরুতেই ডিসেম্বর ২০১৫ সালে ১৩টি প্রসূতির কাজ সম্পন্ন হয়।

পরবর্তীকালে ক্রমান্বয়ে ১৩টি, ১৬টি, ১৭টি, ১০টি, ২৪টি, ৩২টি, ৩৮টি, ৬১টি, ৫৮টি, ৮৬টি এবং সর্বশেষ গত নভেম্বর মাসে ১০১টি মহিলার প্রসবকাজ সম্পন্ন করে এই প্রতিষ্ঠান।

চলতি ডিসেম্বর মাসে এপর্যন্ত আর ২৩টি প্রসবকাজ সম্পন্ন হয়েছে। সর্বাধিক বিবেচনা করে চারিকাটা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি উপজেলার গন্ডি পেরিয়ে সিলেট জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থানে উঠে যায়।

অন্য জরিপে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের মধ্যে প্রসূতির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছার গৌরব অর্জন করে। ইতঃপূর্বে বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে নোয়াখালি জেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারিকাটা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা রওশনারা বেগম বিউটি প্রতিবেদককে জানান, চারিকাটা ইউনিয়নের চেয়ে পার্শ্ববর্তী
দরবস্ত ইউনিয়নের প্রসূতি রোগী বেশি আসেন।

অন্যান্য ইউনিয়নের প্রসূতি রোগী আসেন মোটামুটি। রওশনারা বেগম বিউটি আরও জানান, মমতা প্রকল্পের প্যারামেডিক শরিফা এবং ববিতা খাতুন এ কাজে নিরলসভাবে করছেন। কোনো প্রকার টাকা-পয়সা ছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরীব লোকদের সেবা প্রদান করতে পারায় তাঁরা গর্বিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মমতা প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী রিক্তা দাস প্রতিবেদককে জানান, মমতা প্রকল্প, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ অথবা স্বাস্থ্য বিভাগ কারো পক্ষে ইউনিয়ন পর্যায়ে এক মাসে ১শ’ নবজাতকের সেবা করা সম্ভব নয়।

উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সদস্যাদের আন্তরিকতায় আমরা এটি রতে সক্ষম হয়েছি।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাবিহা কবীর প্রতিবেদকে জানান, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এগিয়ে যাব। আর সকলের সহযোগিতা অব্যাহৃত থাকলে আমরা আরও এগিয়ে যাব ইনশা আল্লাহ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৭৪৭ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031