শিরোনামঃ-

» সিলেটে স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সভা

প্রকাশিত: ২৫. মার্চ. ২০২২ | শুক্রবার

ঈদ উৎসব বোনাস, ন্যায্য মজুরি ও শ্রম আইন কার্যকর করার দাবি

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স’মিল সেক্টরে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে অবিলম্বে বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ ন্যায্য মজুরি ঘোষণা, ৮ ঘন্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রমআইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন, এবং মাসিক মজুরির সমহারে ঈদ বোনাস প্রদানের দাবিতে বাংলাদেশ স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার (২৫ মার্চ) সকাল ১১টায় নগরীর সুরমা মার্কেটস্থ বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কার্যালয়ে অনুষ্টিত সভায় সভাপতিত্ব করেন স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মোস্তাক মিয়া।

সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছাদেক মিয়া। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল স’মিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, নবীগঞ্জ উপজেলা সমিল শ্রমিক সংঘের সহ-সভাপতি আবুল বশর, দক্ষিণ সুরমা স’মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি রতিশ তালুকদার, সিলেট সদর উপজেলা সমিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিলন মিয়া, বালাগঞ্জ উপজেলা সমিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী, ওসমানীনগর উপজেলা সমিল শ্রমিক সংঘের নেতা কয়েছ মিয়া, সিলেট জেলা সমিল শ্রমিক সংঘের কোষাধ্যক্ষ মোঃ ফারুক মিয়া, সমিল শ্রমিকনেতা সফাত আলী, ফজর আলী, দয়াময় দাস প্রমূখ।

সভায় বক্তারা বলেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির বাজারে বর্তমানে স’মিল শ্রমিকরা যে মজুরি পান তা দিয়ে একজন শ্রমিক পরিবারের ১০ দিনও চলে না। চাল, ডাল, তেল, চিনি, শাক-সবজিসহ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের উপর ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধি ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে। জ্বালানি তেল, এলপি গ্যাস, গাড়িভাড়া বৃদ্ধিতে কারণে জনজীবন দিশেহারা।

শ্রমিকদের চাকুরির নিশ্চয়তা ও জীবনের নিরাপত্তা নেই। স’মিলের মালিকরা শ্রমআইন, রাষ্ট্রীয় আইনের তোয়াক্কা করেন না। শ্রমআইন অনুযায়ী নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিসবুক প্রদান, দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের দ্বিগুণ মজুরি, মজুরিসহ সাপ্তাহিক ছুটি, নৈমিত্তিক ছুটি(বছরে ১০ দিন), চিকিৎসা ছুটি (বছরে ১৪ দিন), উৎসব ছুটি (বছরে ১১ দিন) অর্জিত ছুটি (বছরে ২০ দিন) ইত্যাদির প্রদানের বিধান থাকলেও তা প্রদান করা হয় না।

শ্রমিকদের কথায় কথায় ছাঁটাই করা হয়। শ্রমিকদের কাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের জন্য কর্মক্ষেত্রে ন্যূনতম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে স’মিলে কর্মরত শ্রমিকদের শতকরা ৬০ শতাংশ দূর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন। কাঠ চিরতে যেয়ে করাত ছিড়ে, করাত খোলে, বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক কারণে, স্থানান্তর ও উঠানামা করার সময় গাছ পড়ে দূর্ঘটনা ঘটে শ্রমিক হতাহত হওয়ার ঘটনা সাধারণ চিত্র। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অঙ্গহানি হয়, কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। কাজ করতে যেয়ে এ সমস্ত দূর্ঘটনার শিকার শ্রমিকের উপযুক্ত চিকিৎসা যেমন মালিক করেন না, তেমননি অঙ্গহানি ও মৃত্যুর জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপুরণও দেওয়া না। তারউপর সম্প্রতি শ্রমিকদের জ্বালানি কাঠ প্রদানে অনেক মালিক নানা রকম টালবাহনা করছেন, যার কারণে শ্রমিকদের মধ্যে নানা রকম ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দিচ্ছে। অথচ সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরির আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা কমানো বেআইনী। বক্তারা মালিকদের প্রতি এই বেআইনী তৎপরতা বন্ধ করার আহবান জানান।

সভা থেকে অবিলম্বে মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বর্তমান বাজারদরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ন্যায্য মজুরি ঘোষণা এবং স’মিল সেক্টরে নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিসবুক প্রদান, ৮ ঘন্টা কর্মদিবসসহ শ্রমআইন বাস্তবায়ন, চাল-ডাল-তেল পিয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ, সর্বস্তরে রেশনিং চালু, গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন এবং মাসিক মজুরির সমহারে ঈদ বোনাস প্রদানের দাবি জানান।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১২৫ বার

Share Button

Callender

April 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930