শিরোনামঃ-

» প্রতিবাদের ভাষায় উত্তপ্ত ফেঞ্চুগঞ্জ

প্রকাশিত: ০৫. মার্চ. ২০১৮ | সোমবার

বিশেষ প্রতিবেদক (ফেঞ্চুগঞ্জ): ষাট থেকে নব্বই দশকের রাজনীতিতে ফেঞ্চুগঞ্জের অন্যতম সাংগঠনিক কৌশলী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আদর্শের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর প্রিয়ভাজন, তৃণমূল আওয়ামীলীগ নেতা ও ২নং মাইজগাঁও ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যানের নামে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বৃহত্তর কচুয়াবহরস্থ মরহুম তজমুল আলী সড়কের সাইনবোর্ডকে সাদা রং দিয়ে মুছে দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে একটি ঘৃণ্যচক্র।

প্রতিবাদে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, প্রবীণ মুরব্বীয়ান সহ গুণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

সিলেট-৩ আসনের এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী ঘটনাটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন- মরহুম তজমুল আলী গণমানুষের নেতা ছিলেন, যার রাজনৈতিক জীবনের স্বচ্ছতা এবং আদর্শ তাকে ধরে রেখেছে ইতিহাসের পাতায়। এমতাবস্থায় এমন নিন্দনীয় ঘটনা সকলের জন্যই লজ্জাজনক। সেইসাথে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওঠেছে প্রতিবাদের ঝড়।

খবরটি ছড়িয়ে যাওয়া মাত্রই মুঠোফোনে এবং ফেসবুকে ঘটনাটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সহকারী এটর্নি জেনারেল এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু।

তিনি বলেন- জন্ম পরিচয় যাদের নাই তাদের কাজ এটা। জননেতা তজমুল আলী ছিলেন আমাদের ধ্রুব তারা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, এক মাইল ফলক। স্বাধীনতাবিরোধী ও এলাকাবাসীর শত্রু এই কাজ করেছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই বিচার চাই।”

এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে বলেন- পাথরখন্ড থেকে নাম মুছে দিয়ে তজমুল আলীর মতো নেতাদের তৈরি করা ইতিহাসকে বিকৃত করা যায় না। এই ইতিহাসকে মুছে যারা সুখী হতে চায়, তাদের সুখ দীর্ঘস্থায়ী নয়।

যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব ঘটনাটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন- এই ঘটনা আমাদের সকলকেই বিস্মৃত করেছে। তিনি অপরাধীদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

পাশাপাশি ইতিমধ্যেই ঘটনাটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌছ সুলতান- উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শওকত আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত টুটুল, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি সুফিয়ানুল করীম চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ খান জামাল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল কয়েস, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন আহমদ নেওয়াজ, উপজেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের আহবায়ক ময়নুল ইসলাম, ডিগ্রী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস আব্দুল মতিন, নুরুল ইসলাম বাছিত, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদ নুরুল টিপু ও এবিএম কিবরিয়া ময়নুল, সাবেক ছাত্রনেতা মোজাম্মিল হক সুনাম, উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হোসাইন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুর রহমান রোমান, ২ নং মাইজগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মঈন উদ্দিন আহমদ, ২নং মাইজগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালিক শাইস্তা, ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন ইসকা, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান ছুটু, প্রবীণ শিক্ষক উৎপলা পীড় দে মিন্টু, দেওয়ান জহি, ইঞ্জিনিয়ার আহাদ আহমদ, বেলায়েত হোসেন খান, পিন্টু ভূঁইয়া, বিজয় রঞ্জন দে, জাহেদ চৌধুরী, জিল্লুর রহমান লিটন, নুরুল হোসেন খোকন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক হাজী এনামুল হক, আশফাকুল ইসলাম ছাব্বির, নজমুল ইসলাম, ইমরান আহমদ চৌধুরী, মিঠু ভূঁইয়া, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, এ কে আজিজুল্লাহ সঞ্চন, ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক পারভেজ আহমদ, জুলহাস আহমদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক মাহবুবুল ইসলাম চৌধুরী মিসলু, বুলবুল চৌধুরী, বিজন সোম, বদরুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক জালাল আহমদ, ফেঞ্চুগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জুবের আহমদ ছনি, উপজেলা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি আব্দুল হামিদ, উপজেলা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হাসান প্রমুখ।

তারা অবিলম্বে অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে যৌথ বার্তায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন- মরহুম তজমুল আলী মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম একজন সংগঠক এবং তাদের একজন, যার হাত ধরে ফেঞ্চুগঞ্জে আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তজমুল আলী সড়ক সিলেট-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপির হাত ধরেই বাস্তবায়িত হয়েছিল। আমরা ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ- ঘটনাটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অভিলম্বে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

দৈনিক সিলেটের ডাক (৬ জুন ২০১৭), দৈনিক শ্যামল সিলেট (৫ জুন ২০১৭), দৈনিক সবুজ সিলেট (৫ জুন ২০১৭), দৈনিক যুগভেরী (৬ জুন ২০১৭), সিলেটের দৈনিক বিজয়ের কন্ঠ (৬ জুন ২০১৭) এবং দৈনিক সিলেটের দিনরাত (৫ জুন ২০১৭)’র ভাষ্যমতে ২০১৭ সালের ৩ জুন এলাকার জনগণের দাবি পূরণে মরহুম তজমুল আলী সড়কের শুভ উদ্বোধন করেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপি।

বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়- ফেঞ্চুগঞ্জের পালবাড়ীস্থ চৌরাস্থার পূর্বনাম তজমুল আলী স্কয়ার থাকলেও পূর্ববর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধের অপশক্তি রাতের আঁধারে পালবাড়ীস্থ তজমুল আলী স্কয়ার সাইনবোর্ড মাটিতে নুইয়ে দেয়। সেই বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে এলাকাবাসীরা তুলে ধরলেও কোন কার্যকরী উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

অবশেষে তজমুল আলী সড়কের নামকরণকালে এলাকাবাসীরা পুনরায় মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপির উপস্থিতিতে পালবাড়ী চৌরাস্তার নাম তজমুল আলী স্কয়ার নামকরণের দাবি জানান, যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তৃতি লাভ করে। সড়ক উদ্বোধনকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য সর্বজন স্বীকৃত জনপ্রিয় জননেতা তজমুল আলীকে আওয়ামী রাজনীতির অহংকাররূপে আখ্যায়িত করেন।

পরবর্তীতে কিছুদিন আগে পালবাড়ীতে ফেঞ্চুগঞ্জের সাবেক ছাত্রনেতা এবং বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত আওয়ামীলীগ নেতাদের সংবর্ধনা প্রদানকালে বিষয়টি পুনরায় উত্থাপিত হয়, সেসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আওয়ামীলীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌছ সুলতান, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত টুটুল, এলাকার প্রবীণ আওয়ামীলীগার এবং মুরব্বীয়ান সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

প্রশ্ন ওঠেছে, রাতের অন্ধকারে সর্বদল স্বীকৃত জননেতা মরহুম তজমুল আলী স্কয়ারের সাইনবোর্ড মাটিতে শুইয়ে দেয়া মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে দেয়া প্রথম আঘাত এবং বর্তমানে মরহুম তজমুল আলী সড়কের নামফলককে ক্ষতিগ্রস্ত করা মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে দেয়া দ্বিতীয় আঘাত, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে কারা এই অপকর্মগুলোর সাথে জড়িত? কারা মুক্তিযুদ্ধের শত্রু, দেশের শত্রু এবং দশের শত্রু ?

এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মরহুম তজমুল আলীর ছোট ছেলে ফয়েজুল হাসান ফারহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন পরীক্ষার কারণে তিনি ফেঞ্চুগঞ্জের বাহিরে অবস্থান করছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ফারহান বলেন- “আমার পিতাকে আমি দেখিনি, এলাকাবাসী দেখেছে, এলাকাবাসী সম্মান দিয়েছে, এলাকাবাসীই সর্বদা তজমুল আলীর পরিবারকে ভালোবেসেছে এবং তজমুল আলী সড়ক বাস্তবায়নে এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই কয়েস চাচা (মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী) এমপি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।”

তিনি বলেন, এলাকাবাসীর দেয়া উপহারগুলো এলাকাবাসীই সংরক্ষণ করবে বলে তার বিশ্বাস। তাছাড়া তজমুল আলীর পরিবারের সাথে কোনো রাজনৈতিক দল অথবা অন্য কারো ব্যক্তিগত কোন শত্রুতা আছে বলে তার জানা নেই এবং স্থানীয় এমপি মহোদয় সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনদের প্রতি তার এবং তার পরিবারের পূর্ণ আস্থা আছে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১০৫০ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031