শিরোনামঃ-

» আপন জুয়েলার্সের কারণে বিয়ে ভাঙছে এক মেডিকেল ছাত্রীর!

প্রকাশিত: ০৪. জুন. ২০১৭ | রবিবার

এসবিএন ডেস্কঃ আপন জুয়েলার্সের কারণে বিয়ে ভেঙে যেতে বসেছে মেডিকেল পড়ুয়া এক ছাত্রীর! পারিবারিক সিদ্ধান্তে ওই ছাত্রীর বিয়ের দিন ধার্য ছিল ৩০ মে। কিন্তু আপন জুয়েলার্স থেকে স্বর্ণালঙ্কার নিতে না পারায় মহাবিপাকে পড়েছেন ওই ছাত্রী। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।

মে মাসের শুরুতে আপন জুয়েলার্সের ডিসিসি মার্কেটের শো-রুম থেকে মোট ১২ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের অর্ডার দেন তার পরিবার। অগ্রিম টাকাও জমা দেন দুই লাখ ৬৫ হাজার টাকা। কিন্তু গত ১৪ ও ১৫ মে দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো-রুম থেকে সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড সাময়িকভাবে জব্দ করে। এতে বিপদে পড়েন ওই ছাত্রী। এরপর অনেক দেনদরবার করেও স্বর্ণের অলঙ্কার কিংবা টাকা ফেরত নেয়া সম্ভব হয়নি তার।

রোববার (৪ জুন) আপন জুয়েলার্সের গুলশান সিটি কর্পোরেশন মার্কেটের (ডিসিসি) শো-রুম থেকে ৬৮ কেজি স্বর্ণ ও ৩৩৮টি ডায়মন্ডের ছোট নাকফুল আনুষ্ঠানিকভাবে জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। সকাল সাড়ে ৯টায় কাস্টমস হাউজ ঢাকা, কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট উত্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জব্দ প্রক্রিয়া শুরু হয়।

খবর পেয়ে আপন জুয়েলার্স ডিসিসি মার্কেট শো-রুমে মাসহ এক আত্মীয়কে নিয়ে হাজির হন নোয়াখালী মেডিকেল কলেজের শেষবর্ষের ওই ছাত্রী।

ওই ছাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন- তারা আমাকে স্বর্ণ দিতে না পারলে টাকা ফেরত দিক। কিন্তু তারা টাকাও দিচ্ছে না, স্বর্ণও দিচ্ছে না। এ কারণে প্রথম ধাপে বিয়ে পিছিয়েছে। দুই লাখ ৬৫ হাজার টাকার স্বর্ণ তো রাতারাতি কেনা যায় না। যে কারণে বিপাকে আছি। বিয়ে ভাঙার ভয়ে কোনো ব্যবস্থাও নিতে পারছি না।

ওই তরুণীর মা গণমাধ্যমকে বলেন- মোট পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্বর্ণের মধ্যে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকার স্বর্ণ জমা দিয়েছি। এর বাইরে নগদ আরো এক লাখ টাকা দিয়েছি। তাতে মোট অগ্রিম দাঁড়ায় দুই লাখ ৬৫ হাজার টাকা। বাকি দুই লাখ ৯৫ হাজার টাকা নিয়ে গত ১৫ দিন ধরে ঘুরছি, কিন্তু স্বর্ণ দিতে পারেনি আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন- স্বর্ণ না দিতে পারলে টাকা ফেরত চেয়েছি, কিন্তু তাও দিচ্ছে না তারা। আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ শুল্ক গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলছেন। শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কিছুই করার নেই।

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আরজিনা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন- যারা রিপেয়ারিং করতে স্বর্ণের অলঙ্কার আপন জুয়েলার্সের শো-রুমগুলোতে দিয়েছিলেন শুধু তাদের নোটিস করে এবং ফোন দিয়ে ডেকে বুঝিয়ে দিয়েছি। আমরা দুই পর্বে কাজটি করেছি, যাতে কোনো গ্রাহক হয়রানির শিকার না হন। কিন্তু যারা ক্রয় করেছেন বা অগ্রিম টাকা জমা দিয়েছেন তাদের জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। কারণ সব স্বর্ণের কাগজপত্র নেই আপন জুয়েলার্স মালিকপক্ষের।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। এমন অভিযোগ এনে বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী। মামলায় অভিযুক্ত একজন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার হোসেনের ছেলে সাফাত আহমেদ। সাফাতসহ পাঁচ আসামি এখন কারাগারে।

ওই ঘটনার পর আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের অবৈধ সম্পদ খুঁজতে তার প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। বিভিন্ন মহল থেকে আপন জুয়েলার্সের অলঙ্কার বর্জনেরও দাবি ওঠে।

গত ১৪ ও ১৫ মে আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান অ্যাভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকের পাঁচটি শো-রুমে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৩.৫ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড সাময়িকভাবে জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দারা।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩৩৪ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031