শিরোনামঃ-

» ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি ত্বককে দ্বিগুণ ফর্সা করে বিজ্ঞাপনের সত্যতা প্রমাণের নির্দেশ

প্রকাশিত: ২১. অক্টোবর. ২০১৬ | শুক্রবার

সিলেট বাংলা নিউজ লাইফষ্টাইল:: একটি বহুজাতিক কোম্পানির ত্বকের রঙ (নাকি রঙ্গ) ফর্সাকারী প্রসাধনীর বিজ্ঞাপনে ৫ কোটি টাকার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলা হচ্ছে, একটি ৩০০ টাকা মুল্যের বিদেশী ক্রিম নাকি তাদের পন্য, কোনটা বেটার? !!!
বিজ্ঞাপনটা প্রথম দেখাতেই মুখ দিয়ে যে কথাটি বের হয়ে আসলো, “ওয়েট, ওয়েট, জাস্ট এ মিনিট… এই বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানিটি কি নিজেদের এই দেশীয় কোম্পানি বলে দাবী করতে চাচ্ছে?”।
বাংলাদেশের প্রিন্টেড, ইলেক্ট্রনিক্স আর ভার্চুয়াল, প্রতিটি মিডিয়াতেই এই বিজ্ঞাপন ভিত্তিক মিথ্যাচার আর প্রতারণা করা হচ্ছে, সবার চোখের সামনে, একেবারে নাকের উপর দিয়ে।
কিন্তু কোথাও কেউ কি এদেশে বলার আছে? আছে কি কোন প্রশাসন? কোন বিজ্ঞাপন নীতিমালা অথবা কোথায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন? কোথাও কেউ নেই।
টেলিভিশনের পর্দায় চোখ পড়লেই একটি বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। একজন তরুণী ফেয়ার অ্যান্ড লাভলির ল্যাবে ঢুকে বলছেন, ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলিকে হারাতে পারেনি কেউ…। এখন আমরা চ্যালেঞ্জ করছি সারা পৃথিবীকে।’

২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে মার্চ ২০১৫ সাল পর্যন্ত ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি ‘৫ কোটি টাকার চ্যালেঞ্জ চ্যালেঞ্জ’ ক্যাম্পেইনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় বলে দাবি করছে ইউনিলিভার।

বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয় দুবাই, সিঙ্গাপুর আর জাপানের কিছু বিখ্যাত ক্রিমকে হারিয়ে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি প্রথম হয়েছে।

বিজ্ঞাপনে বলা হয়, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও জাপানের বিখ্যাত সব ক্রিমকে হারিয়ে ‘আনবিটাবল’ ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি। এই ক্রিম ত্বককে দ্বিগুণ ফর্সা করে বলেও দাবি করা হয় বিজ্ঞাপনে।

বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক তার অভিযোগে বলছেন, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলির বিজ্ঞাপনে প্রচারিত তথ্যগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার যথার্থতা যাচাই করা প্রয়োজন, যাতে জনগণ প্রতারিত হতে না পারে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট পণ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠানকে তার পণ্যের বিজ্ঞাপনে প্রচারিত তথ্যের সপক্ষে প্রমাণ দিতে বলা যেতে পারে।

এই দাবি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলে সেটি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪৪ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য বলেও মনে করেন এই সরকারি কর্মকর্তা।

শুনানিতে অভিযোগকারী মাহবুব কবীর এবং ইউনিলিভারের ৩ জন আইনজীবি অংশ নেন। শুনানি গ্রহণ করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মজিদ।

অভিযোগকারী সরকারি কর্মকর্তা মাহবুব কবীর বলেন, ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি কীভাবে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে চ্যাম্পিয়ান হল, সেই চ্যাম্পিয়ান অনুষ্ঠানে বিচারক কারা ছিল, এটা কী ইনডোর প্রোগ্রাম ছিল নাকি আউট ডোর, বিশ্বকে তারা কীভাবে চ্যালেঞ্জ দিল সেই প্রমাণাধিসহ সকল তথ্য-প্রমাণ হাজির করার জন্য শুনানি কর্মকর্তা ইউনিলিভারকে নির্দেশ দিয়েছে। তারা হয়তো ১৫ দিন সময় পাবে তথ্য-প্রমাণ জমা দেয়ার।’

জানতে চাইলে শুনানি কর্মকর্তা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-সচিব আব্দুল মজিদ বলেন, ‘ইউনিলিভারকে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ এবং বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করে যে বিজ্ঞাপন দিয়েছে সেটির সপক্ষে সকল কাগজপত্র ও প্রমাণাদি চাওয়া হয়েছে।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিলিভারি এর আইনজীবিদের বক্তব্য নিতে চাইলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি। একজন বলেছেন, ‘কোন মন্তব্য নয়।’ এমনকি নিজের নাম বা পরিচয়ও বলেননি।

ইউনিলিভারের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী সরকারি কর্মকর্তা মাহবুব কবীর সাংবাদিকদেরকে জানান, ইউনিলিভারের কর্মীরা নানা সময় দম্ভোক্তি করে বলেছেন, তাদের নিয়ে কেউ সংবাদ প্রচার করবে না।

তিনি বলেন, ‘এসব কথা শুনে আমি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমাকে তিনি বলেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে যে লিখবো, তারা তো আমাদের বড় বিজ্ঞাপনদাতা।’

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫১৯ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031