শিরোনামঃ-

» সিলেটে ২১ জুলাই রেজিস্ট্রারী মাঠে ফের জামায়াতের জনসভা

প্রকাশিত: ১৫. জুলাই. ২০২৩ | শনিবার

ডেস্ক নিউজঃ
পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় আগামী শুক্রবার (২১ জুলাই) রেজিস্ট্রারী মাঠে পুনরায় জনসভার তারিখ ঘোষণা করেছে সিলেট মহানগর জামায়াত।

শনিবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় নগরীর কুদরত উল্লাহ মার্কেটস্থ নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন তথ্যই দেন নগর আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। জামায়াত নগরীর জিন্দাবাজার এক অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ করেছিল, পুলিশী বাঁধায় সেখানে করা যায়নি বলে জামায়াত নেতারা অবিযোগ করেন।

ফখরুল ইসলাম জানান, গতকাল রাতে সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি না দেয়ার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে আমরা বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি।ফলে আজ আমরা সংবাদ সম্মেলন করছি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি মজলুম সংগঠন। স্বাধীনতা পরবর্তী প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীরা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দেশ ও জাতির কল্যাণে গঠনমূলক ভুমিকা পালন করেছেন। জাতির যে কোন ক্রান্তিকালে জামায়াত আর্ত মানবতার কল্যাণে নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র, আইন ও মানবাধিকারের পক্ষে জামায়াত সবসময় শক্তিশালী ভুমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানেও জাতির ক্রান্তিলগ্নে জামায়াত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী নিয়ে রাজপথে আছে।

তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ জামায়াত নেতৃবৃন্দ ও কারান্তরীণ আলেম-উলামাদের মুক্তি, নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতি রোধ, ঘন ঘন লোডশেডিং, দফায় দফায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর মূল্যবৃদ্ধির ফলে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ, বিদেশে পাচারকরা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা ও পাচারকারীদের শাস্তি প্রদান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে সাংবাদিক দমন পীড়ন বন্ধ ও বন্ধ করে দেয়া ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া সমূহ খুলে দেয়া সহ জনসংশ্লিষ্ট ১০ দফা দাবীতে আজ শনিবার বেলা ২টায় সিলেট মহানগর জামায়াতের শান্তিপূর্ণ জনসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু শুক্রবার রাতে এসএমপির পক্ষ থেকে জনসভার অনুমতি দেয়া হয়নি বলে আমাদেরকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়। কিন্তু কোন কারণে আমাদের জনসভার অনুমতি দেয়া হয়নি সেই বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নহে।পুলিশের এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতভম্ব হই এই কারণে যে কিসের ভিত্তিতে আমাদের জনসভা করতে দেয়া হয়নি এব্যাপারে আমাদেরকে কোন কিছু বলা হয়নি। তবে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আমরা লক্ষ্য করলাম পুলিশের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে নাশকতার আশঙ্কা থেকে নাকি অনুমতি দেয়া হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতেও আমাদের সমাবেশ নিয়ে এরুপ আশঙ্কা করেছিল পুলিশ। কিন্তু জামায়াত শান্তিপূর্ণভাবে সেই সমাবেশ সফলের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে নাশকতার সাথে জামায়াতের কোন সংশ্লিষ্টতা কখনো ছিলনা, বর্তমানেও নেই, ভবিষ্যতেও এই রকম হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে পুলিশ প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে সিলেটবাসী বিস্মিত, হতবাক এবং জনগণ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এর মাধ্যমে আরেকবার প্রমাণ হলো দেশে নাগরিক অধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন বলে কিছু নেই।

সিলেটে আমাদের জনসভার অনুমতি না দেয়ায় উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমাদের বক্তব্য জাতির সামনে তুলে ধরতেই এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, জামায়াত দেশ ও জাতির কঠিন সময়ে সবসময় বৃহত্তর স্বার্থে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করে আসছে। ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, গুমকৃত সকল ব্যক্তিদের অক্ষত অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া, নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত হাজার হাজার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ জেলা ও মহানগরীর সকল দলীয় কার্যালয় অবিলম্বে খুলে দেয়া, উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও মুক্তি না দিয়েও জেলে আটক রাখার বেআইনী, অসাংবিধানিক ও মানবাধিকার পরিপন্থী কর্মকান্ড বন্ধ করা, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে আটক নেতৃবৃন্দের মুক্তির পরিবর্তে মিথ্যা মামলা দিয়ে বার বার হয়রানী করা, এমনকি কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে রিমান্ডের নামে অমানবিক নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ১০ দফা দাবীতে জামায়াত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছে।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে আমাদের শান্তিপূর্ণ জনসভার অনুমতি দেয়া হয়নি। অথচ সভা সমাবেশ করা সকল দলের সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আমাদের সেই অধিকারকে দীর্ঘদিন থেকে হরণ করা হয়েছে। আমাদের নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় বিচারের নামে ফাসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে, কারাগারে রেখে বিনা বিচারে মৃত্যুর মূখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমীর সাবেক এমপি মাওলানা শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারী জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পারওয়ার, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন থেকে কারাগারে আটকে রাখা হচ্ছে। বিশ্ববরণ্যে আলেমে দ্বীন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মাওলানা মামনুল হক, মুফতী আমির হামযাসহ অনেক আলেম-উলামাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে বিরোধী দলীয় সকল রাজবন্দী ও আলেম-উলামার নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানাচ্ছি।

ফখরুল ইসলাম পরিশেষে বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী বাস্তবায়নে সাংবাদিক, গণমাধ্যমকর্মী, প্রশাসন ও সিলেটবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের সিলেট জেলা উত্তর আমীর আনোয়ার হোসেন খান, মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, সেক্রেটারী মো: শাহজাহান আলী, সিলেট জেলা উত্তর শাখার সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, মহানগর সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট আব্দুর রব প্রমুখ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১২৫ বার

Share Button

Callender

March 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31