শিরোনামঃ-

» সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী রবিবার

প্রকাশিত: ২৯. এপ্রিল. ২০২৩ | শনিবার

স্টাফ রিপোর্টারঃ

বরেণ্য অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা  আবুল  মাল  আবদুল মুহিত এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল (৩০ এপ্রিল) রবিবার।

গত বছর অর্থাৎ (২০২২ সালের) ৩০ এপ্রিল না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বিশ্বব্যাপী খ্যাতিমান এই কৃতী সন্তান। রবিবার আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট ও ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নাগরিক উদ্যোগ’ সিলেটের উদ্যোগে ৩০ এপ্রিল রবিবার সকাল ১১টায় মরহুমের কবর জিয়ারত ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে শোক সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন টানানো হয়েছে।

এছাড়া আগামী ১৪ মে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সোলেমান হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সিলেটে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সকালে মরহুমের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

সাবেক অর্থমন্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে রবিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামস্থ জেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের হলরুমে এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

এতে উপস্থিত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম।

আব্দুল জব্বার জলিল কল্যাণ ট্রাস্ট:

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টায় ট্রাস্টের উদ্যোগে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র হল রুম আনন্দ টাওয়ার জেল রোডে কোরআনে খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম:

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্থার উদ্যোগে নগরের হাউজিং এস্টেটস্থ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম মাদ্রাসায় দুপুর ১২টায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ ৩০ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

বিকেল ৩টায় সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের পক্ষ থেকে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

এতে দলীয় নেতাকর্মী সহ সবাইকে উপস্হিত থাকতে আহবান জানিয়েছেন, যুবলীগ নেতৃবৃন্দ। ঐদিন বাদ আছর সিলেট সদর উপজেলা বাসীর পক্ষ থেকে সিলেট নগরীর টুকেরবাজার শাহ খুররম ডিগ্রী কলেজ মসজিদে দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়াও এ এম এ মুহিতের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় মরহুমের পরিবার এ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসুচী আয়োজন করা হয়েছে। আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫শে জানুয়ারি বর্তমান সিলেট শহরের ধোপাদিঘিরপাড়ে পৈতৃক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

বাবা এডভোকেট আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ছিলেন, তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা। মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ছিলেন, সিলেট মহিলা মুসলিম লীগের সহ-সভানেত্রী।

আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাত্রজীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে স্কুল ছাত্র হিসেবে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন এবং রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে জড়িত হন। ১৯৪৯ সালে সিলেট সরকারি পাইলট হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতকার্য হন। ১৯৫১ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে আইএ পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করেন।

আবুল মাল আবদুল মুহিত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯৫২ সালের মাতৃভাষা ভাষা আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম এবং ১৯৫৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে এমএ পাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। বিদেশে চাকুরীরত অবস্থায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন তিনি।

অতঃপর ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমপিএ ডিগ্রী লাভ করেন। পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস-এ (সিএসপি) যোগ দেয়ার পর মুহিত তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার, পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে  আবুল  মাল  আবদুল মুহিত যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করেন এবং সেখানে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযোদ্ধের  পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশের পরিকল্পনা সচিব নিযুক্ত হন।

তবে এই দায়িত্ব গ্রহণ না করে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে ওয়াশিংটন দূতাবাসে ইকোনোমিক মিনিস্টারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯৭৪ সালে তিনি এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। এখন পর্যন্ত তিনি একমাত্র বাংলাদেশী, যিনি এ পদে আসীন হয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগে সচিব পদে নিযুক্ত হন।

১৯৮১ সালে চাকরির ২৫ বছর পূর্তিকালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে তিনি স্বেচ্ছায় সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন। এরপর তিনি দেশ ও বিদেশে অগুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে শেষে ২০০১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন।২০০৯ সালে সিলেট-১ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

পরবর্তীতে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে তিনি নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। ২০১৪ সালে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আবারো অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে সর্বোচ্চ ১২ বার বাজেট দেন তিনি।

২০১৮ সালের তিনি রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ৩০ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার দিবাগত রাতে ৮৮ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ২২ বার

Share Button

Callender

June 2023
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930