শিরোনামঃ-

» আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আলোচনা সভা

প্রকাশিত: ০৮. মার্চ. ২০২১ | সোমবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ

আরপিও অ্যাক্টে ৩৩% নারী অর্ন্তভুক্তির ধারায় নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে আইনটি পাশ করা দাবী।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ২০২০ সালের মধ্যে সর্বস্তরে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণের যে বাধ্যবাধকতা ছিল, কোন রাজনৈতিক দল শর্ত পূরণ করতে পারেনি।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৩৩% নারী অর্ন্তভুক্তির ধারায় নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে অবিলম্বে আইনটি পাশ করতে হবে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ ৮ মার্চ ২০২১ ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয় আয়োজিত এক অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন- নেতৃত্বে নারী: কোভিড বিশ্বে সমতার আগামী বিনির্মাণ’। এর আলোকে বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, অবস্থান ও ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে সুদৃঢ় করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সোমবার (৮ মার্চ) ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে আড়াই দশকেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলের চালকের আসনে নারী।

দুটি প্রধান দলের শীর্ষ পদে নারী নেতৃত্ব থাকা সত্ত্বেও আমাদের রাজনৈতিক কাঠামো নারীর ক্ষমতায়নের সহায়ক নয়। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা বর্জন করে রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে এমন উন্নত পর্যায়ে নিতে হবে, যেখানে পুরষের পাশাপাশি নারীরা সমভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণে আগ্রহী হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চা বাড়াতে পারলে তৃণমূল থেকে নারী নেতৃত্বকে শক্তিশালী করা সম্ভব।

এছাড়া অনুষ্ঠানে মূল দলের দলীয় কার্যক্রমে নারী ও পুরুষদের বক্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে সমান গুরুত্ব দেয়া; নীতি নির্ধারণী বিষয়ে মতামত গ্রহণে গুরুত্ব প্রদান; নির্বাচন সংক্রান্ত পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা; পদাধিকারী নারী নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ দলীয় প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করা; নারী নেতাদের দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদানসহ রাজনৈতিক দলসমূহের বিভিন্ন করণীয় প্রসঙ্গ বক্তাদের আলোচনায় উঠে আসে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে সুসংহত করতে, সারা দেশে নারীদের রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতাসমূহ চিহ্নিত করতে এবং বাধা সমূহ উত্তরণের জন্যে নারী নেতারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালা সামনে আনেনঃ

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৩৩% নারী অর্ন্তভুক্তির ধারায় নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে অবিলম্বে আইনটি পাশ করতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৩৩% নারী অর্ন্তভুক্তির ধারা বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। এই সেল রাজনৈতিক দলের মূলধারার কমিটিতে নারীর অংশগ্রহণ প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে কিনা তা নিয়মিতভাবে মনিটর করবে।

উক্ত ধারা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের মধ্যে কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। এই সেল রাজনৈতিক দলের তৃণমূল কমিটিতে নারীর অংশগ্রহণ প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে কিনা তা নিয়মিতভাবে মনিটর করবে। কেন্দ্র থেকে জেলা এবং জেলা থেকে উপজেলায় চিঠির মাধ্যমে নারী অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। তৃণমূলের কোন কমিটিতে কাঙ্খিত সংখ্যক নারী নেতা না থাকলে কেন্দ্র থেকে সেই কমিটির অনুমোদন না দেওয়া।

নির্বাচন কমিশন কতৃক তৃণমূল পর্যায়ে দলে নারীর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে একটি বাৎসরিক প্রতিবেদন পেশ করার বাধ্যবাধকতা থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। মূলধারার কমিটিতে ৩৩% নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রত্যেক দলের নিজস্ব রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।

নারীর জন্যে দলের ভিতরে এবং বাইরে নিরাপদ এবং সহযোগিতামূলক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নারীদের রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল বিভিন্ন কমিটিতে নারীদের ৩৩% প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে কোন কমিটি ব্যর্থ হলে জবাবদিহিতার জন্যে কমিটিকে অবহিত করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করতে পারে। কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদে নারী নেতাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং মূলধারার রাজনীতিতে যোগ্য নারী নেতার সংখ্যা বাড়ানো।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেইন, সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক, এডভোকেট নাসির উদ্দিনখান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, সিলেট মহানগর বিএনপি সহসভাপতি, সামিয়া বেগম চৌধুরী, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো: রেজাউলহক, সুনাগমগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুর্শেদ আহমদ মুকুল, সিলেট জেলা মহিলাদলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নিগার সুলতানা কেয়া, সিলেট জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক আমেনা বেগম রুমি, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক, নিগার সুলতানা ডেইজি, সুনামগঞ্জ জেলামহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফেজা ফেরদৌস লিপন, সিলেট মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হাস্না হেনা, সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সৈয়দা ফারহানা ইমা, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রিনা হোসেন।

সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান ও সঞ্চালনা করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর আঞ্চলিক সমন্বয়ক মোছাম্মদ রাহিমা বেগম, নারী দিবসের ইতিহাস উপস্থাপন করেন, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক প্রোগাম সমন্বয়ক ফরহাদ আহমদ।

এই অনুষ্ঠানটি ইউএসএআইডি ও ইউকেএইড এর যৌথ অর্থায়নে ‘Strengthening Political Landscape’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে নারীর জয়ে সবার জয় ক্যাম্পেইনের আওতায় আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই) আরও সহনশীল ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে সক্রিয় নাগরিকবৃন্দ ও সংবেদনশীল সরকার সমূহকে সহায়তা প্রদান করছে এবং সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলসমূহকে সাথে নিয়ে কাজ করছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৫৩ বার

Share Button

Callender

February 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728