শিরোনামঃ-

» সিলেটে কমিশন শেরীনকে নিয়ে মহাবিপাকে আবাসনের পরিচালকরা

প্রকাশিত: ২৬. ডিসেম্বর. ২০২০ | শনিবার

বিশেষ সংবাদদাতাঃ
সিলেটের বৃহৎ উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান আবাসন এসোসিয়েট এবং আবাসন ডেভলাপার্স এর পরিচালকরা এখন মহাবিপাকে কোম্পানী দু’টির চেয়ারম্যানকে নিয়ে। শুধু কমিশনের আশায় কোম্পানী জিম্মী হয়ে আছে চেয়ারম্যানের কাছে।

প্রায় ৩০ কোটি টাকার সম্পদ বিক্রি করে বড় অংকের কমিশন পাবেন এই মিশনে লিপ্ত রয়েছেন চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীন। ফলে কোম্পনীতে তার পরিচয় কমিশন শেরীন হিসেবে। শেরীন আবাসনের জমি যাতে বিক্রি করতে না পারেন সেজন্য জেলা রেজিস্ট্রারী অফিসে আবেদন জমা দেয়া হয়েছে আবাসনের পরিচালকদের পক্ষ থেকে।

এদিকে, আবাসনের ৯৬ ডেসিমেল জমি কোন ব্যাংকে জমা দিয়ে শেরীন যাতে ব্যাংক লোন নিতে না পারেন সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন জানানো হয়েছে সাধারন পরিচালকদের পক্ষ থেকে।

আবাসনের সাথে জড়িত একাধিক সূত্র এসব বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

শেরীনের এই অপতৎপরতায় দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা পরিচালকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে, রয়েছে উদ্বেগ।

অধিকাংশ পরিচালক আবাসনের জমি নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নিতে চাইছেন। তবে পরিচালকদের মতামত তোয়াক্কা করছেন না শেরীন।

গত ২০ ডিসেম্বর আবাসন কোম্পানী দু’টির এজিএম আহ্বান করেছিলেন শেরীন। তার ডাকা এজিএমে কোন পরিচালক যোগ দেননি।

পরিচালকদের একটি অংশ এজিএম জানুয়ারিতে আয়োজনের জন্য অনুরোধ করেন। অনেকে এজিএম এর চিঠি না পাওয়ার অভিযোগ করেন।

বিস্ময়কর হলেও একটি শীর্ষ কোম্পানীর এজিএম এর চিঠি একটি ওয়াটসআপ গ্রুপে পোস্ট করেন। ফলে এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃস্টি হয়।

এদিকে, ২০ ডিসেম্বর পরিচালকদের উপস্থিতি ছাড়াই শেরীন এজিএম সম্পন্ন করেছেন এবং জয়েন্ট স্টকে জাল স্বাক্ষরের কাগজ জমা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সামগ্রিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আবাসের পরিচালক যুক্তরাস্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক এমদাদ চৌধুরী দীপু তাঁর বক্তব্য বিশদভাবে তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, ২০০৪ সালে সাংবাদিকতার পাশাপাশি একটি অত্যাধুনিক মার্কেট নির্মানের জন্য নিজের সঞ্চিত অর্থ, নিকটাত্মীয়ের সহযোগীতা এবং একজন ব্যাংকার শুভাকাংখীকে শরীক করে আবাসন এসোসিয়েটে যোগ দেই। আমি উদ্যোক্তাদের একজন এবং এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য ছিলাম। দেশে অবস্থানকালে এবং প্রবাসে এসে (অনলাইনে) আবাসনের সমস্যা সমাধানের জন্য শতাধিক বিভিন্ন ধরনের সভায় অংশ নিয়েছি।

আজ চরম হতাশা নিয়ে সবার সাহায্য আশা করছি।

সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে বিবেকের দায় হিসেবে নিম্নোক্ত দাবী তুলে ধরছি।

আশা করছি এই দাবী বাস্তবায়িত হলে ৬৭ জন পরিচালক এবং ২০/২৫ জন শেয়ার হোল্ডার এক ধরনের জিম্মী অবস্থা এবং অন্তহীন অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পাবেন।

আবাসনের বর্তমানে কোন বৈধ কমিটি নেই। ৫ বছর আগে এজিএম করে একটি কমিটি ঘোষনা করা হলেও বিস্ময়করভাবে তাদেরকে দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হয়নি।

পরিচালকদের সম্মতি নেই অথচ প্রকল্প এলাকায় শোভা পাচ্ছিল জমি বিক্রির সাইনবোর্ড।

সম্প্রতি সে সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলেন দেশে অবস্থানরত পরিচালকরা। বর্তমানে যিনি এমডি দাবীদার ফতেহ আহমদ চৌধুরী শাহীন, তিনি সীমাহীন দায়িত্বহীনতা, অযোগ্যতা, অদক্ষতা, জবাবদিহীতা ছাড়াই আমেরিকায় অবস্থান করে এমডি দাবী করছেন।

বর্তমানে তিনি দেশে অবস্থান করছেন এবং দফায় দফায় শেরীনের অপতৎপরতা বন্ধে করনীয় নির্ধারনের জন্য পরামর্শ করছেন।

বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীন ১৩ বছর যাবত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন না। জমি বিক্রির ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। কোম্পানীকে ব্যক্তি কেন্দ্রীক করেছেন। আবাসন এসোসিয়েট, আবাসন ডেভলাপার্সের ব্যানারে সবকিছু পরিচালিত হলেও ডেভলাপার্স কোম্পানীর নামে কোন জমি নেই। এ ব্যাপারে উদ্বেগ রয়েছে সংশ্লিস্ট পরিচালকদের মাঝে। আবাসনের সমস্যা, সংকট, আর অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার বিবরন অনেক দীর্ঘ উল্লেখ করেন এমদাদ চৌধুরী দীপু।

আবাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার একটি পরিবেশ সৃস্টি হবে। শান্তিপ্রিয় দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী উপকৃত হবেন। দেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে তাঁদের নেতিবাচক দৃস্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে।

সবার সম্মিলিত প্রচেস্টায় একটি দীর্ঘমেয়াদী সংকটের আশু সমাধা হোক এই প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

সিলেট মহানগরীর আম্বরখানায় আবাসন এসোসিয়েট এবং আবাসন ডেভলাপার্স এর সমস্যা সমাধানের জন্য এমদাদ হোসেন চৌধুরী দীপুর ১০ দফা দাবী হচ্ছে;
(১) আবাসন এসোসিয়েট নামক প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত ঘোষনা করা হোক আইনী প্রক্রিয়া অবলম্বন করে।
(২) আবাসনের জমি বিক্রির সব তৎপরতা বন্ধ করা হোক।

(৩) আবাসনের জমি ভাগ-বাটোয়ারা করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একটি তহবিলে টার্গেট নির্ধারন করা হোক এবং পরিচালকদের উপর চাঁদা নির্ধারন করা হোক।
(৪) আবাসন ডেভলাপার্সের বিনিয়োগ নিরাপদ করার জন্য দ্রুত একটি চুক্তি করা হোক।
(৫) আবাসনের জন্য ছোট্ট একটি অফিস ও অফিস সচিব নিয়োগ দেয়া হোক। সব জরুরী কাগজ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে এনে একত্র করা হোক।একটি ইমেইল আইড চালু করা হোক।
(৬) আবাসনের জমি ভাগ করার জন্য একটি অন্তবর্তী মুল কমিটি করা হোক।
(৭) আবাসনের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে কয়েকটি সাব কমিটি করা হোক।
(৮) আবাসনের পরিচালকদের তালিকা প্রকাশ করা হোক বিনিয়োগের পরিমান, বকেয়ার পরিমান, সহায়তা দিয়ে থাকলে সেটির পরিমান সহ।
(৯) আবাসনের সমস্যা সমাধানে আন্তরিক না হলে চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হোক।
(১০) আবাসনের ১০ জন পরিচালক থেকে একজন পরিচালক নির্বাচিত করে ৭ জনের একটি কমিটি করা হোক এবং এই কমিটির সিদ্বান্ত হবে চুড়ান্ত সিদ্বান্ত।

এই ৭ সদসস্যের একজনকে প্রধান করে ৭টি উপ কমিটি করা হোক।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ২২৭ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031