» সিসিক মেয়র আরিফের অপসারণ চান ২২ জন কাউন্সিলর

প্রকাশিত: ০৪. মার্চ. ২০২০ | বুধবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অপসারণ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিচ্ছেন ২২ জন কাউন্সিলর। অনিয়মের অভিযোগ এনে সিসিকের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ট কাউন্সিলররা অপসারণ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন।

বুধবার (৪ মার্চ) দুপুরে তাদের স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবেন।

মেয়র অপসারণ চাওয়া অভিযোগে স্বাক্ষর করেন- সিটি করপোরেশনের ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. তারেক উদ্দিন তাজ, ৩নং ওয়ার্ডের এ কে এম লায়েক, ২০নং ওয়ার্ডের আজাদুর রহমান আজাদ, ১৩নং ওয়ার্ডের শান্তনু দত্ত শন্তু, ২৫নং ওয়ার্ডের তাকবিরুল ইসলাম পিন্টু, ১৪নং ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৬নং ওয়ার্ডের আব্দুল মুহিত জাবেদ, ১নং ওয়ার্ডের সৈয়দ তৌহিদুল হাদী, ২১নং ওয়ার্ডের আব্দুরন রকিব তুহিন, ১৫নং ওয়ার্ডের ছয়ফুল আমিন বাকের, ৬নং ওয়ার্ডের ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ২৩নং ওয়ার্ডের মোস্তাক আহমদ, ৯নং ওয়ার্ডের মখলিছুর রহমান কামরান, ১৯নং ওয়ার্ডের এসএম শওকত আমিন তৌহিদ, ৮নং ওয়ার্ডের ইলিয়াছুর রহমান, ১১নং ওয়ার্ডের রকিবুল ইসলাম ঝলক, ১২নং ওয়ার্ডের সিকন্দর আলী, সংরক্ষিত- ৪নং ওয়ার্ডের মাসুদা সুলতানা, সংরক্ষিত- ৭নং ওয়ার্ডের নাজনীন আক্তার কনা, সংরক্ষিত- ৮নং ওয়ার্ডের রেবেকা আক্তার লাকি।

লিখিত অভিযোগে কাউন্সিলররা উল্লেখ করেছেন- বাংলাদেশ সরকার যখন স্বচ্ছতা, জবাবদিহীত, সবার অংশগ্রহণে জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তখনই লক্ষ্য করা গেছে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাধারণ সভায় উপস্থাপন ও আলোচনা না করে বর্তমান পরিষদকে উপেক্ষা করে পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই দক্ষিণ সুরমা এলাকার তেঁতলী ইউনিয়নের বানেশ্বরপুর মৌজায় জায়গা অধিগ্রহণ করেছেন।

তাছাড়া সিটি করপোরেশনের জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে টাকার বিনিময়ে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বিভিন্ন শাখায় লোক নিয়োগ করেছেন। তার ব্যক্তিগত বৃহৎ স্বার্থে সিটি করপোরেশনের স্বার্থ ক্ষুদ্র করে কাজে আসে না এমন অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। বিভিন্ন এলাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান থেকে বিল পাওয়ার ক্ষেত্রে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার মাধ্যমে কমিশন বাণিজ্য করেন, যা সিটি করপোরেশনের আইন ও বিধিমালার ধারা-১৩ এর উপধারা ১ (ঘ) অনুসারে মেয়র পদে থেকে অপসারণ যোগ্য অপরাধ। সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বিষয়টি তদন্ত পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক। বিষয়টি বিবেচনা পূর্বক তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষ মেয়রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তারা।

কাউন্সিলররা আরো জানান, গত দু’দিন আগে মেয়র অপসারণের বিষয়ে একমতে পৌঁছতে তারা বেশ কয়েকবার বৈঠকে মিলিত হন। অনেকটা গোপনে বৈঠকে মিলিত হয়ে ঐক্যমতের পর এবার প্রকাশ্যে আসছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযোগকারী কাউন্সিলরদের অনেকে বলেন, আপাতত আমরা অভিযোগ দিচ্ছি। পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলন করে মেয়রের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয় তুলে ধরবো।

অভিযোগে স্বাক্ষরকারী সিসিকের কাউন্সিলররা জানান, পরিষদকে না জানিয়ে তেঁতলী ইউনিয়নের বানেশ্বপুর মৌজায় ২৭ কেদার (৪১০ শতক) ২০ শতক ভূমি ২৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা অধিগ্রহণ ব্যয় দেখিয়েছেন মেয়র। কিন্তু তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই টাকায় ৩ ভাগের ১ ভাগ টাকা দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এছাড়া ৫০ জনের স্থলে আড়াইশ’ পরিচ্ছন্ন কর্মীর বেতন তুলে আত্মসাত করা হচ্ছে।

এসব অভিযোগের বাইরেও মেয়র নিজের মেয়েকে সিসিকের একটি প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে রেখেছেন মোটা অংকের বিনিময়ে। আর ডে লেবারদের এপিএস, পিএস করে বিদেশে পাঠিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।

তারা বলেন, এই অভিযোগ বুধবার (৪ মার্চ) দুপুরে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে। এছাড়া আরো বিস্তর অভিযোগ আছে মেয়রের বিরুদ্ধে, যেগুলো তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে বলে দাবি করেন অভিযোগকারী কাউন্সিলররা।

কাউন্সিলরদের পক্ষে সিসিকের ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক বকস লিপন স্বাক্ষরিত অভিযোগের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও মেয়রের একান্ত সচিব বরাবরে দেওয়া হবে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩৮১ বার

Share Button

Callender

April 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930