শিরোনামঃ-

» কমরেড বাদল কর আজীবন শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন

প্রকাশিত: ২০. আগস্ট. ২০১৭ | রবিবার

স্টাফ রিপোর্টারঃ কমরেড বাদল কর শোকসভা কমিটির উদ্যোগে শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৫টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনের ২য় তলায় কমিটির আহ্বায়ক ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী’র সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কমরেড আনোয়ার হোসেন সুমনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত নাগরিক শোক সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম মেম্বার কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমদ।

সিলেটের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাসদ সিলেট জেলার সভাপতি লোকমান আহমদ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট ই ইউ শহিদুল ইসলাম শাহিন, অধ্যক্ষ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সিপিবি’র সভাপতি কমরেড হাবিবুল ইসলাম খোকা, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সিকান্দার আলী, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিয়া, বাসদ সমন্বয়ক কমরেড আবু জাফর, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা কমিটির কমরেড হুমায়ূন রশিদ শুয়েব, সাম্যবাদী দলের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য কমরেড আফরোজ আলী, প্রফেসর ড. আবুল কাশেম, উদীচীর সভাপতি কবি এ.কে. শেরাম, কমরেড রতন দেব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের এনামুল মনির, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, কবি তোষার কর, কবি পুলিন রায়, কবি মাধব রায়, এড. মাসুক আহমদ, কমরেড আনিসুর রহমান, যুব নেতা খায়রুল হাসান, ছাত্র ইউনিয়নের মো. নাবিল প্রমুখ।

সভার শুরুতেই কমরেড বাদল করের জীবনের নানাদিক তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয় কমরেড বাদল কর ১৯৪৩ ইংরেজিতে জন্মগ্রহণ করে ১৯৬৩ ইংরেজি সনে দি এইডেড হাই্ স্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৬৫ ইংরেজি সনে মদন মোহন কলেজ হইতে এইচএসসি পাশ করেন। স্কুলে থাকাকালীন সময়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হন। ছাত্র ইউনিয়নের মদন মোহন কলেজ শাখার কর্মী হিসেবে যুক্ত থাকা অবস্থায় ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে সিলেটের রেজিস্টারী মাঠে প্রথম অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।

এসময় মদন মোহন কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়ন জয়যুক্ত হয়। উক্ত ছাত্র সংসদের উদ্যোগে মদন মোহন কলেজে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এক্ষেত্রে কমরেড বাদল করের অগ্রণী ভূমিকা ছিল।

পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পর সিলেটে উদীচীর প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক ও পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আজীবন কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে শোষনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন।

তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিলেট জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় কংগ্রেসে কমরেড বাদল করকে ভেটারেন কমরেড হিসেবে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

মুখ্য আলোচক কমরেড সৈয়দ আবু জাফর বলেন, আদর্শের মৃত্যু নেই। সমাজতন্ত্রের মৃত্যু নেই। যতদিন পৃথিবীতে শোষণ থাকবে ততদিন শোষনমুক্ত সমাজপ্রতিষ্ঠার লড়াই থাকবে। কমরেড বাদল কর আজীবন শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। যতদিন মালিক শ্রমিক দ্বন্ধ থাকবে শ্রেণী বৈষম্য থাকবে ততদিন সমাজতন্ত্রের প্রয়োজনীতা থাকবে।

কমরেড বাদল কর যে আদর্শকে লালন করে গেছেন তার প্রতি প্রকৃত সম্মান জানাতে হলে সে আদর্শের ঝান্ডাকে সামনে তুলে ধরতে হবে। সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য পূরণের জন্য সমাজতন্ত্রের আদর্শের সকল সৈনিককে একতাবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সিলেটে বিলুপবাদীদের কবল থেকে কমিউনিস্ট পার্টিকে সংঘঠিত করার কাজে কমরেড বাদল কর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি বলেন- ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়া সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিষয়ে বর্তমান সরকার নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় বিরোধীতা না করে রাস্তায় দাড়িয়ে যে ভাষায় সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে গালি গালাজ করা হচ্ছে তা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। সরকারের এ আচরণ দেশকে গভীর সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার দিন দিন ফ্যাসিবাদী আচরণের দিকে যাচ্ছে।

গণতান্ত্রিক পরিবেশ আজ গভীর হুমকির মধ্যে পড়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে কমরেড বাদল করের মতো কমরেডের খুবই প্রয়োজন ছিল।

কমরেড বাদল করের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে নাগরিক শোক সভার সূচনা হয় এবং সর্বশেষে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে নাগরিক শোক সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩৪৮ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031