শিরোনামঃ-

» আশুগঞ্জে সাপের রাজত্ব!

প্রকাশিত: ০৪. ডিসেম্বর. ২০১৬ | রবিবার

বিশেষ প্রতিবেদকঃ ব্রাজিলের সাও পাওলো থেকে প্রায় ৯০ মাইল দূরে অবস্থিত এই দ্বীপ ‘লা দ্য কুইমাদা গ্রানাদে’ দ্বীপ প্রকৃতির সে রকমই এক সৌন্দর্যের জায়গা। দ্বীপটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হলেও এখানে আছে বিপদের হাতছানি। কারণ দ্বীপজুড়ে কিলবিল করছে হাজার হাজার সাপ।
‘লা দ্য কুইমাদা গ্রানাদে’ দ্বীপকে এজন্য সাপের দ্বীপও বলা হয়। দ্বীপটিতে এত বেশি সাপের বাস যে, মাটিতে পা ফেলার জায়গা পাওয়াও কঠিন ব্যাপার। সাপগুলো খুব বিষধরও। এক ছোবলেই সেগুলো যে পরিমাণ বিষ উগড়ে দেয়, তাতে সঙ্গে সঙ্গে মরে যেতে পারে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ।
তেমনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন ও ভবনের আশপাশ ‘লা দ্য কুইমাদা গ্রানাদে’ দ্বীপ প্রকৃতির মতো না হলেও অর্ধশতাধিক সাপের উপস্থিতিতে পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে সাপের আতঙ্ক। ভবন ও ভবনের আশপাশে দেখা যাচ্ছে বিষধর গোখরা সাপ। সাপের আতঙ্কে ব্যাহত হচ্ছে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের স্বাভাবিক কাজকর্ম।
কেবল উপজেলা প্রশাসনই নয় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সাপের দেখা মিলছে। গত ৬ মাসে অর্ধশতাধিক সাপ মেরেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। সাপুড়ের হাতে ধরা পড়েছে ২৪টি বিষধর গোখরা সাপ। গত বছর উপজেলার খোলাপাড়া গ্রামের পশ্চিম আলগা বাড়ির আবদুন নূরের ছেলে মো. মামুন সাপের দংশনে মারা যায়।
এরই মধ্যে গত শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ভবনের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের পাশের সিঁড়ির নিচ থেকে একটি বিষধর গোখরা সাপ ধরেন এক সাপুড়ে। একই দিন উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামের একটি বসত বাড়ি থেকে পাঁচটি বিষধর গোখরা সাপ ধরা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিক আহমেদ খান বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের অফিসার্স ক্লাবের পাশেই কিছু গর্ত রয়েছে। এসব গর্ত থেকে প্রায়ই সাপ উঠে আসে। সাপের আতঙ্কে রাতের বেলায় উপজেলা প্রশাসনিক কার্যালয়ে ভয়ে যেতে পারি না। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে দিনের বেলায় সাপ সামনে দিয়ে চলাফেরা করে। এতে ভয় আরো বেড়ে যায়।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই সাপ দেখে এলাকার সাধারণ মানুষ রাতে চলাফেরা করতে ভয় পাচ্ছেন। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন সাপ আতঙ্কে। বিশেষ করে উপজেলা প্রশাসনের নিচতলায় সাপের দেখা মেলায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনে আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।
আড়াইসিধা গ্রামের দেওয়ান ভূঁইয়া বলেন, ‘কিছুদিন ধরে আমার ঘরের আশপাশে সাপ দেখতে পাই। রাতের বেলায় চলাচল করতে গেলে ভয়ে বাইরে যেতে পারি না। পরে একজন সাপুড়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। সাপুড়ে বিভিন্ন জায়গায় দেখে পাঁচটি বিষধর গোখরা উদ্ধার করে। প্রতিটি সাপ লম্বায় প্রায় তিন থেকে ৭ ফুট।’
আশুগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের আশপাশে যে কয়টি সাপ আছে, তা ধরার জন্য আমরা সাপুড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এরই মধ্যে একটি বড় বিষধর গোখরা সাপ জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। সাপুড়েকে আবারও আনা হবে এবং উপজেলা প্রশাসনকে সাপমুক্ত করা হবে।
পর্যায়ক্রমে উপজেলা প্রশাসনের বাইরে থাকা সাপ ধরার জন্য চেষ্টা করা হবে।’
সাপ ধরতে আসা সাপুড়ে আবুল কালাম লালন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে উজান এলাকার পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বিষধর এই সাপ এসেছে। পানির স্রোতের সঙ্গে এসব সাপ বিভিন্ন এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। পুরোনো বাড়িগুলোতে এসব সাপ বাসা বানায়। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩৫৫ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031