শিরোনামঃ-

» ক্যাম্পাস থেকে শাবি ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা, আটক ২

প্রকাশিত: ০৮. অক্টোবর. ২০১৬ | শনিবার

সিলেট বাংলা নিউজঃ সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে এক ছাত্রীকে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে জড়িত থাকায় ২ জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার দুপুর প্রায় ১টার দিকে ছাত্রী হল ও শিক্ষক কোয়ার্টারের মাঝখানে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক মো. রাশেদ তালুকদার বলেন, শুক্রবার দুপুরে নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে আবাসিক হল থেকে কৌশলে বের করে এনে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় তাদের আটক করা হয়।

এরা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী কাওসার আহমেদ ও তার বোন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাইজা রহমান। আর হামলার শিকার প্রিয়াঙ্কা (ছদ্মনাম) শাবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।

প্রক্টর বলেন, “ওই ছাত্রীকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার সময় গণিত বিভাগের অধ্যাপক সাজেদুল করিম বিষয়টি দেখে তাকে মারধরের কারণ জানতে চান। তিনি আমাদের খবর দিলে আমরা তাদের আটক করে পুলিশে দেই।”

তবে কাওছারের দাবি ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার তিন বছর ধরে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ রয়েছে। সম্প্রতি ওই ছাত্রী আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোয় বিষয়ে কথা বলার জন্য বোনকে নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন।

শাবি ছাত্রী প্রিয়াঙ্কার (ছদ্মনাম) বন্ধুদের সূত্র জানায়, তিন বছর পূর্বে ফেইসবুকে কাওসারের সঙ্গে তার পরিচয়। কয়েক মাস আগে তাদের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়।
তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম জানান, দুপুর আনুমানিক ১২টা ৪০ মিনিটে জুমার নামাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে দেখেন, বখাটে ওই ছাত্রীকে জোর করে রিকশায় তুলে তার মাথায় এবং ঘাড়ে আঘাত করছে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
মারধরে ছাত্রীটি কান্নাকাটি করলেও রিকশায় থাকা অপর মেয়েটি মুচকি হাসছিল। ড. সাজেদুল করিম রিকশাকে দাঁড় করাতে বললে পাশে থাকা মেয়েটি ধমকের সুরে বলে, ‘আপনি এখানে নাক গলাবেন না, এটা পারিবারিক সমস্যা।’ তাদের সম্পর্ক জিজ্ঞেস করলে ছেলেটি জবাব দেয়, তার স্ত্রীকে সে মারছে, আর সঙ্গে থাকা অপর মেয়েটি তার বোন।
পরে অধ্যাপক সাজেদুল করিম কয়েকজন শিক্ষকের সহায়তায় তাদের আটক করে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশকে ফোন দেন। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরইমধ্যে সেখানে জড়ো হওয়া বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কাওসারকে মারধর করেন। পরে কাওসার, তার বোন এবং মারধরের শিকার ছাত্রীকে জালালাবাদ থানা পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কাওসার দাবি করেন, ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার ৩ বছর থেকে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ রয়েছে। সম্প্রতি ওই ছাত্রী আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোয় বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলতে তার বোনকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন। “তাদের সম্পর্ক জিজ্ঞাসা করলে ছেলেটি জবাব দেয় তার স্ত্রীকে মারছে আর সাথে থাকা মেয়েটি তার বোন।”

তবে ছাত্রীটি কোনো সম্পর্ক নেই বললে, তাদের আটক করে প্রক্টরিয়াল কমিটিকে খবর দেন বলে জানান সাজেদুল করিম। এ ঘটনায় মেয়েটি বাদী হয়ে অপহরণের মামলাও করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. রাশেদ তালুকদার জানান, এখন ওই ছাত্রীর জবানবন্দি ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মুঠোফোনে জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা থানায় রয়েছেন। তাদের উপস্থিতিতে ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪২৮ বার

Share Button

Callender

May 2024
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031