শিরোনামঃ-

» টাঙ্গাইলে দর্জি হত্যার ঘটনায় মামলা, আটক ৩

প্রকাশিত: ০১. মে. ২০১৬ | রবিবার

সিলেট বাংলা নি্‌উজ ডেস্কঃ অজ্ঞাত ৩ ব্যক্তিকে আসামী করে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে দর্জিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত দরজি নিখিল চন্দ্র জোয়ারদারের স্ত্রী আরতি জোয়ারদার বাদী হয়ে শনিবার রাতে গোপালপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

এ ঘটনায় স্থানীয় ১ জামায়াত নেতাসহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে টাঙ্গাইলের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (উত্তর) মোহাম্মদ আসলাম খান জানিয়েছেন।

গোপালপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুল জলিল জানান, নিহতের স্ত্রী আরতি রানি শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয় ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন, মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরের দিকে গোপালপুর পৌর এলাকার ডুবাইল বাজারে দরজি নিখিলকে (৫০) লোকজনের সামনেই কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার ছয়-সাত ঘণ্টার মধ্যেই হত্যার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

র‍্যাব-১২-এর ৩ নম্বর কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, পারিবারিক শত্রুতা, জমি নিয়ে বিরোধ ও জঙ্গিবাদ—এই তিন বিষয় সামনে রেখে তারা ঘটনার তদন্ত করবেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করার অভিযোগে ২০১২ সালে নিখিল গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।

নিখিল চন্দ্র ওই বাজার এলাকার মৃত নলিনীকান্ত জোয়ারদারের ছেলে। তিনি নিজের বাড়ির সামনে দরজির দোকান চালাতেন।

পুলিশ ও নিখিলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গতকাল সকালে নিখিল দোকান খোলেন। ১২টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে ৩ জন তরুণ ওই দোকানে আসে। তারা ‘কথা আছে’ বলে নিখিলকে দোকান থেকে ডেকে রাস্তার পাশে নিয়ে যায়।

কথা শুরুর একপর্যায়ে তারা চাপাতি দিয়ে নিখিলের মাথা ও গলায় আঘাত করতে থাকে। নিখিলের চিৎকার শুনে তার স্ত্রী আরতি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।

আরতি বলেন, বের হয়েই তিনি দেখেন ২ তরুণ নিখিলকে কোপাচ্ছে এবং ১ জন মোটরসাইকেলে বসে আছে। আরতি এ সময় এগিয়ে যেতে চাইলে তাকে রক্তমাখা চাপাতি দিয়ে ভয় দেখানো হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা

মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলের কাছে থাকা এক ব্যক্তি ইট হাতে তাদের দিকে এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা ককটেল মারার ভয় দেখায়।

চলে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা একটি ব্যাগ ফেলে যায়। পরে পুলিশ ওই ব্যাগ থেকে ৪টি ককটেল-জাতীয় বস্তু ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করে। আরতি বলেন, তার স্বামীর কোনো শত্রু ছিল না। কেন তাকে খুন করা হলো, তা তারা বুঝতে পারছেন না।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, নিখিল অত্যন্ত নিরীহ ছিলেন। ২০১২ সালে ডুবাইল বাজারে আড্ডা দেওয়ার সময় মহানবী (সা.) সম্পর্কে তিনি নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

ওই সময় তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলকারীরা তাকে মারধর ও দোকান ভাঙচুর করেন। পরে মামলা করা হলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন জেল খাটার পর তিনি জামিনে মুক্তি পান।

এরপরও এলাকায় ফিরতে তার সমস্যা হচ্ছিল। পরে এলাকার লোকজনের সঙ্গে সমঝোতা করে তিনি বাড়িতে ফেরেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫৪৯ বার

Share Button

Callender

March 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31