শিরোনামঃ-

» চা শ্রমিকদের স্বার্থ বিরোধী প্রজ্ঞাপন বাতিল কর : বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন

প্রকাশিত: ০১. সেপ্টেম্বর. ২০২৩ | শুক্রবার

 ডেস্ক নিউজঃ
আজ শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন,সিলেট জেলার উদ্যোগে গত ১০ আগস্ট ২০২৩ বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রনালয়ের মজুরি বোর্ড কর্তৃক চা বাগানের শ্রমিক ও কর্মচারিদের মজুরি সংক্রান্ত বিষয়ে চা শ্রমিকদের স্বার্থ বিরোধী প্রজ্ঞাপন(গেজেট) বাতিলের দাবি জানিয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে  বিরেন সিং এর সভাপতিত্বে ও অজিত রায় এর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা উজ্জ্বল রায়, জেলা উপদেষ্টা মুখলেসুর রহমান, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয় লোহার, অর্থ সম্পাদক নমিতা রায়,খান চা বাগানের সাধারন সম্পাদক উষা বুনার্জি, কেওয়াছড়া চা বাগানের  কল্পনা বাড়াইক,চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ এর সভাপতি অধীর বাউরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,’ মালিক, শ্রমিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় প্রতিনিধিদের আলোচনা  সাপেক্ষে মজুরি নির্ধারণের আইনী বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও সরকারের মজুরি বোর্ড শ্রমিক প্রতিনিধিদের সাথে কোনো আলোচনা ছাড়াই চা শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ১৭০/১৬৯/১৬৮ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
গেজেট এ দ্বিবার্ষিক চুক্তিতে ত্রিপক্ষীয় মজুরির আলোচনা বাতিল করে ৫ শতাংশ হারে প্রতি বছর মজুরি  বৃদ্ধির যে কথা বলা হয়েছে তা খুব এ অন্যায় কারণ প্রতি বছর ৮ টাকা ৫০ পয়সা বাড়লে তা  বাজারের সাথে কোন ভাবেই সংগতিপুর্ণ তো নয়ই বরং চা শ্রমিক ইউনিয়নকে অকার্যকর করে চা শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন ও গণতান্ত্রিক  আন্দোলনের অধিকার হরন করার চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়।
কেননা বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমান বাজার দর হিসেবে একটা পরিবার ন্যুনতম দৈনিক ৬৫০ টাকার কমে চলতে পারে না।তার পরও সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে আমরা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরির দাবি করে আসছি।চা বাগানের সাধারণ শ্রমিক ও ছাত্র যুবকরা দৈনিক মাত্র ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে গত বছর আগষ্ট মাসে লাগাতার ১৯ দিন অনাহারে অর্ধাহারে থেকে ধর্মঘট,রাজপথ অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছে।
আন্দোলনের চাপে প্রধানমন্ত্রী শ্রমিক প্রতিনিধি ছাড়াই মালিকদের সাথে আলোচনা করে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা ঘোষণা দেন।
তখন কাঙ্ক্ষিত মজুরি না হওয়া সত্ত্বেও আন্দোলনকারি শ্রমিকেরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান রেখে দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরি সাময়িক ভাবে মেনে নিয়ে আন্দোলন স্তগিত করে।কিন্তুু দুঃখের বিষয় শ্রমিদের ১৭০ টাকা মজুরির এরিয়া বিল (বকেয়া মজুরি) ৩১,৫০০ টাকা এখনো পরিশোধ করা হয় নি। ৩১,৫০০ টাকা বকেয়ার মধ্য মাত্র ১১,০০০ টাকা প্রদানের আরেকটি প্রজ্ঞাপন সম্প্রতি জারি করা হয়েছে।
যা ইতিমধ্যে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। আবার এই গেজেট বাস্তবায়ন হলে চা শ্রমিকরা আরো ১ বছরের এরিয়া টাকা হারাবে।তাছাড়া বোনাস এর পরিমান কমিয়ে ৫২ দিনের বেতনের পরিবর্তে কমিয়ে ৪৭ দিনের বেতনের সমপরিমান করা, মাতৃকালীন ছুটি তিন মাস রাখা,গ্র‍্যাচুইটিসহ প্রতি বিষয়ে মালিকের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে এই গেজেটে।শ্রমআইনের অনেক ধারাও লংঘন করা হয়েছে।
অথচ মালিকপক্ষ বিভিন্নভাবে চা শ্রমিকদের নিরিখ বাড়িয়ে, পি এফ এর টাকা ও অন্যান্য সুবিধা না দিয়ে শোষণ নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
সরকার এই গেজেট এর মাধ্যমে  আগস্ট আন্দোলনে চা শ্রমিকদের আকাঙ্ক্ষাকে  পদতলিত  করে নগ্নভাবে মালিকশ্রেনির স্বার্থকে রক্ষা করেছে।তাই অবিলম্বে  এই গেজেট বাতিল করতে হবে।
বক্তারা গেজেট বাতিল করা, দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিসহ ১০ দফার  দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল চা শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানান।
সমাবেশ শেষে শহীদ মিনার থেকে আম্বরখানা পর্যন্ত মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১০০ বার

Share Button

Callender

July 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031