শিরোনামঃ-

» ভারতের মেঘালয়’র ডাউকি স্থলবন্দর উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৪. মে. ২০২৩ | বৃহস্পতিবার

 ডেস্ক নিউজঃ

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি’তে অর্থনৈতিক ভাবে উভয় দেশের ব্যবসায়ীগণ অনেক লাভবান হবেন
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায় বলেছেন,ভারতের মেঘালয়’র ডাউকি স্থলবন্দর উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি’তে অর্থনৈতিক ভাবে উভয় দেশের ব্যবসায়ীগণ অনেক লাভবান হবেন। তিনি বলেন,বাংলাদেশের সাথে ভারতের ঐতহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ডাউকি স্থলবন্দর নিমির্ত হওয়ার আমাদের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে উভয় দেশ আরও এগিয়ে যাবে। মেঘালয়ে আগত পর্যটকগণ আধুনিক মানের সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন ।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুর ১টায় টায় মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি স্থলবন্দরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শ্রী নিত্যানন্দ রায় আরও বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মেঘালয় রাজ্যের উন্নয়নে যুগান্তকারী প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসাম সহ সেভেন সিস্টার্স রাজ্য গুলোতে ব্যাপক উন্নয়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মেঘালয়ের ডাউকি অনেক সুন্দার পর্যটন এলাকা। তিনি ভারতীয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্ট সবাই কে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকায় সীমান্ত অনেক সুরক্ষিত রয়েছে।
তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র মধ্যে ভাই-বোনের মত সম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
শিলং বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের জন্য চমৎকার জায়গা । ডাউকি স্থলবন্দর উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ফেনী নদী খনন কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ডাউকি স্থলবন্দরে তথ্য প্রযুক্তি ও আধুনিক মানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, ডাউকি স্থলবন্দর ভারতীয় সকল মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে পরিচালিত হবে। ডাউকি স্থলবন্দর উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ী ও সূধীজন সহ দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ-কে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ভারতীয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অদিত্য মিশ্ররা,বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় কুমার ভর্মা, মেঘালয় রাজ্য সরকারেে ডেপুটি চীফ মিনিষ্টার সাংওয়াবাং ডিয়ার, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: আলমগীর, মেঘালয় সরকারের এডিশনাল সেক্রেটারী ডা: সাকিল আহম্মদ, সিলেটে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার নিরাজ কুমার জেসওয়াল, বিএসএফ শিলং সেক্টরের ডিজি প্রদীপ কুমার, মেঘালয় পুলিশের ডিজিপি ডা:এল ভুষন আইপিএস এবং পশ্চিম জৈন্তিয়া হিলর্স’র এলাকার এমএলএ লকমন রাম্বাই।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: আলমগীর বলেন, ভারতের সাথে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে উভয় দেশ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনা যুদ্ধে ভারতীয় সরকারের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে তাদের-কে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে ডাউকি স্থলবন্দর নিমার্ণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীদের মধ্যে উত্তরীয় দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে মেঘালয় চেম্বার অব কমার্স’র সেক্রেটারী ডলি খংলো সহ স্থানীয় আদিবাসী নেতৃবৃন্দ অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছে জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে অংশ গ্রহন করেন তামাবিল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মাহফুজুল ইসলাম ভূইয়া,কাস্টমস কর্মকর্তাগণ, দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সহ-সভাপতি মো: আতিক হোসেন, তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানী কারক গ্রুপের সভাপতি এম লিয়াকত আলী, সহ-সভপতি মো: জালাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট চেম্বার অব কমার্স’র পরিচালক সরোয়ার হোসেন (ছেদু), আমদানী কারক ব্যবসায়ী ও জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী জাকির হোসেন (আর্মি), জৈন্তাপুর প্রেসক্লাব সভাপতি নূরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী সৈয়দ শামীম আহমদ,আনোয়ার হোসেন ও ইসমাইল আলী।
এদিকে সকাল সাড়ে ১১টায় তামাবিল স্থলবন্দরে এসে পৌছিলে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রনয় কুমার ভর্মা সহ অতিথিদের-কে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের নেতৃবৃন্দ।
ডাউকি স্থলবন্দর মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম জৈন্তিয়া পাহাড়ে অবস্থিত। স্থলবন্দর বিকশিত হলে, এটি হবে ভারত ও বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তে রাজ্যের প্রথম স্থলবন্দর, রাজধানী শহর শিলং থেকে অন্তত ৮৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ডাউকি শিলংয়ের সাথে একটি সর্ব-আবহাওয়া সড়ক দ্বারা সংযুক্ত এবং বাংলাদেশী পর্যটকদের জন্য একটি সুবিধাজনক পয়েন্টে থাকবে যারা নিয়মিত শিলং, যা ‘প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড’ নামে পরিচিত এবং এর প্রতিবেশী পর্যটকদের আগ্রহের স্থানগুলি দেখার জন্য ভারতে যান। তাদের জন্য এই স্থলবন্দরে অনেক সুবিধা রয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সংলগ্ন ২৩ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত নতুন নিমির্ত ডাউকি স্থলবন্দর, নতুন স্থলবন্দর ডাউকি জাতীয় মহাসড়ক ২০৬ এবং এশিয়ান হাইওয়ে-এর সাথে সংযুক্ত।
ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধীনে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত, ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ-কে সীমান্তে স্থলবন্দর নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং নির্বিঘ্ন,ও দক্ষ করার সুবিধার্থে অত্যাধুনিক অবকাঠামোগত সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।
ডাউকি স্থলবন্দর বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানোর সামগ্রিক উদ্দেশ্য নিয়ে পণ্যসম্ভার এবং যাত্রীদের চলাচল, আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের প্রচার এবং সর্বোত্তম আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা’র অনুশীলনগুলি করা হবে।
এখানে এলপিএআই তার আইসিপি গুলিতে পণ্যবাহী পরিবহনের পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং পদ্ধতিগত সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করা হয়েছে। আইসিপি-তে বেশির ভাগ পরিসেবাই বিনামূল্যে, বাণিজ্যের জন্য যে গুলি শুল্কের নির্ধারিত হার অনুযায়ী চার্জ করা হয় ।
বাণিজ্যের জন্য চার্জযোগ্য পরিষেবাগুলির মধ্যে রয়েছে পার্কিং,ওজন পরিসেবা, লোডিং/আনলোডিং এবং গুদামজাতকরণের জন্য চার্জ। যাত্রীদের জন্য কোন প্রবেশ মূল্য নেই। আইসিপি’তে সমস্ত যাত্রী সুবিধায় বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হবে।
স্থলসীমান্তে এলপিএআই প্রদত্ত সবরকম সুযোগ-সুবিধার পরিসরের ডাউকি স্থলবন্দর নির্মাণ করা হয়েছে। ভারতীয় সরকার সীমান্তে স্থলবন্দর তৈরি করে পণ্যসম্ভার ও যাত্রী চলাচলের জন্য নিরাপদ, নিরবচ্ছিন্ন এবং দক্ষ ব্যবস্থা প্রদান করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানো, আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা।
এতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি সহ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ডাউকি স্থলবন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১০৫ বার

Share Button

Callender

April 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930