শিরোনামঃ-

» সিলেটে কমিশন শেরীন বেপরোয়া, নেপথ্যে স্বাক্ষর জালিয়াতি

প্রকাশিত: ০১. জানুয়ারি. ২০২১ | শুক্রবার

আবাসনের পরিচালকরা উদ্বিগ্ন

বিশেষ সংবাদদাতাঃ
সিলেটের বৃহৎ উদ্যোক্তা প্রতিস্টান আবাসন এসোসিয়েট এবং আবাসন ডেভলাপার্সের জন্ম হয়েছে স্বাক্ষর জালিয়াতি আর প্রতারনার মাধ্যমে।

কোম্পানীর প্রকল্প পরিচালক লন্ডন প্রবাসী নাসির উদ্দন পরিচালকদের স্বাক্ষর জাল করে জয়েন্ট স্টকে জমা দিয়েছেন। এই জাল স্বাক্ষরকে পুজি করে এখন আবাসনে বেপরোয়া কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন কোম্পানীর চেয়ারম্যান কমিশন শেরীন।

ঠিকানার ক্রয় করা জমিতে আবাসনের যাত্রা শুরু হয়। এই সূচনায় শেরীন-নাসির গংদের প্রতারনার সবচেয়ে বড় উদাহরন হলো আবাসন ডেভলাপার্স কোম্পানীর বিপরীতে কোন জমি না থাকা। শুরুতে জাল স্বাক্ষর দিয়ে কোম্পানী নিবন্ধিত হওয়ার কারণে এখন শেরীন নাছিরের পরিচালকদের স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়না। এই সুযোগ অপব্যবহার করে কমিশন শেরীন অবাসনের জমি বিক্রি এবং ব্যাংকে জমা দেয়ার পায়তারা অব্যাহত রেখেছেন এবং এজিএম এর তোয়াক্কা না করে প্রকল্প এলাকায় জমি বিক্রির সাইনবোর্ড লাগানোর সাহস দেখাচ্ছেন, এককভাবে জমি বিক্রি কিংবা বন্ধক দেয়ার জন্য তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। তার এই কর্মকান্ডে চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন দেশ-বিদেশের পরিচালকরা।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, শেরীন কোম্পানীর পরিচালক হওয়ার জন্য সব টাকা পরিশোধ করেননি, তাঁর কাছে বড় অংকের বকেয়া রয়েছে।

একই অবস্থা সাবেক এমডি আব্দুল হামিদের ক্ষেত্রে, তাঁর কাছে কোম্পানীর পাওনা আছে।

এদিকে, আবাসনের প্রকল্প পরিচালক নাসির খুব কম টাকায় আবাসনের পরিচালক হয়েছেন বলে কোম্পানীতে গুঞ্জন রয়েছে।

এছাড়া নাসিরের বিরোদ্ধে রয়েছে নানা সুবিধা নেয়ার অভিযোগ।

জানা গেছে, আবাসনের পরিচালকরা এখন মহাবিপাকে কেম্পানী দু’টির চেয়ারম্যানকে নিয়ে।

শুধু কমিশনের আশায় কোম্পানী জিম্মী হয়ে আছে গত কোরবানীর ঈদে চামড়া কান্ডে আলোচিত জগন্নাথপুর উপজেলার একটি ইউপি চেয়ারম্যান আবাসনের বর্তমান বিতর্কিত সমালোচিত চেয়ারম্যানের কাছে।

প্রায় ৩০ কোটি টাকার সম্পদ বিক্রি করে বড় অংকের কমিশণ পাবেন এই মিশনে লিপ্ত রয়েছেন চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীন।

ফলে কোম্পনীতে তাঁর পরিচয় কমিশন শেরীন হিসেবে। শেরীন আবাসনের জমি যাতে বিক্রি করতে না পারেন সে জন্য জেলা রেজিস্ট্রারী অফিসে আবেদন জমা দেয়া হয়েছে আবাসনের পরিচালকদের পক্ষ থেকে।

এদিকে আবাসনের ৯৬ ডেসিমেল জমি কোন ব্যাংকে জমা দিয়ে শেরীন যাতে ব্যাংক লোন নিতে না পারেন, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন জানানো হয়েছে সাধারন পরিচালকদের পক্ষ থেকে।

আবাসনের সাথে জড়িত একাধিক সূত্র এসব বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

শেরীনের এই অপতৎপরতায় দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা পরিচালকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে, রয়েছে উদ্বেগ। অধিকাংশ পরিচালক আবাসনের জমি নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নিতে চাইছেন।

তবে পরিচালকদের মতামত তোয়াক্কা করছেন না শেরীন। গত ২০ ডিসেম্বর আবাসন কোম্পানী দু’টির এজিএম আহ্বান করেছিলেন শেরীন। তাঁর ডাকা এজিএমে কোন পরিচালক যোগ দেননি।

পরিচালকদের একটি অংশ এজিএম জানুয়ারিতে আয়োজনের জন্য অনুরোধ করেন। অনেকে এজিএম এর চিঠি না পাওয়ার অভিযোগ করেন।

বিস্ময়কর হলেও একটি শীর্ষ কোম্পানীর এজিএম এর চিঠি একটি ওয়াটসআপ গ্রুপে পোস্ট করেন। ফলে এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃস্টি হয়।

এদিকে, ২০ ডিসেম্বর পরিচালকদের উপস্থিতি ছাড়াই শেরীন এজিএম সম্পন্ন করেছেন এবং জয়েন্ট স্টকে জাল স্বাক্ষরের কাগজ জমা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সামগ্রিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আবাসনের পরিচালক যুক্তরাস্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক এমদাদ চৌধুরী দীপু তাঁর বক্তব্য বিশদভাবে তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, ২০০৪ সালে সাংবাদিকতার পাশাপাশি একটি অত্যাধুনিক মার্কেট নির্মানের জন্য নিজের সঞ্চিত অর্থ, নিকটাত্মীয়ের সহযোগীতা এবং একজন ব্যাংকার শুভাকাংখীকে শরীক করে আবাসন এসোসিয়েটে যোগ দেই। আমি উদ্যোক্তাদের একজন এবং এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য ছিলাম।

দেশে অবস্থানকালে এবং প্রবাসে এসে (অনলাইনে) আবাসনের সমস্যা সমাধানের জন্য শতাধিক বিভিন্ন ধরনের সভায় অংশ নিয়েছি।

আজ চরম হতাশা নিয়ে সবার সাহায্য আশা করছি  এবং সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে বিবেকের দায় হিসেবে নিম্নোক্ত দাবী তুলে ধরছি।

আশা করছি এই দাবী বাস্তবায়িত হলে ৬৭ জন পরিচালক এবং ২০/২৫ জন শেয়ার হোল্ডার একধরনের জিম্মী অবস্থা এবং অন্তহীন অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পাবেন।

আবাসনের বর্তমানে কোন বৈধ কমিটি নেই। ৫ বছর আগে এজিএম করে একটি কমিটি ঘোষনা করা হলেও বিস্ময়করভাবে তাঁদেরকে দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হয়নি।

পরিচালকদের সম্মতি নেই অথচ প্রকল্প এলাকায় শোভা পাচ্ছিলো জমি বিক্রির সাইনবোর্ড।

সম্প্রতি সে সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলেন দেশে অবস্থানরত পরিচালকরা। বর্তমানে যিনি এমডি দাবীদার ফতেহ আহমদ চৌধুরী শাহীন।

তিনি সীমাহীন দায়িত্বহীনতা, অযোগ্যতা, অদক্ষতা, জবাবদিহীতা ছাড়াই আমেরিকায় অবস্থান করে এমডি দাবী করছেন।

বর্তমানে তিনি দেশে অবস্থান করছেন এবং দফায় দফায় শেরীনের অপতৎপরতা বন্ধে করনীয় নির্ধারনের জন্য পরামর্শ করছেন।

বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীন ১৩ বছর যাবত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন না বরং জমি বিক্রির ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন, কোম্পানীকে ব্যক্তি কেন্দ্রীক করেছেন।

আবাসন এসোসিয়েট, আবাসন ডেভলাপার্সের ব্যানারে সবকিছু পরিচালিত হলেও ডেভলাপার্স কোম্পানীর নামে কোন জমি নেই।

এ ব্যাপারে উদ্বেগ রয়েছে সংশ্লিস্ট পরিচালকদের মাঝে। আবাসনের সমস্যা, সংকট আর অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার বিবরন অনেক দীর্ঘ বিবরন উল্লেখ করেন এমদাদ চৌধুরী দীপু।

আবাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার একটি পরিবেশ সৃস্টি হবে। শান্তিপ্রিয় দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী উপকৃত হবেন। দেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে তাদের নেতিবাচক দৃস্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে।

সবার সম্মিলিত প্রচেস্টায় একটি দীর্ঘমেয়াদী সংকটের আশু সমাধা হোক এই প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১০২২ বার

Share Button

Callender

March 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031