» ৩’শ কোটি টাকা খরচ করে ১৮ হাজার বিসিএস ক্যাডার!

প্রকাশিত: ২৮. জানুয়ারি. ২০১৮ | রবিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির বিষয়টি যখন আলোচনায়, ঠিক সেই সময় বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত করা নিয়ে ৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তোলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফারহানা বিলকিস। এ পোস্টের জন্য গত ২৫ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) ড. মোল্লা জালাল উদ্দিনের দফতরে শুনানিতে তাকে জবাব দিতে হয়েছে।

ভূগোল বিভাগের ওই শিক্ষক তার ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘তিনশ কোটি টাকার বাণিজ্যে বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের বিসিএস ক্যাডার বানিয়ে শিক্ষার বারোটা বাজানো কর্মকর্তা এবং বর্তমানে নতুন করে পরীক্ষা ছাড়া ১৮ হাজার বিসিএস ক্যাডার বানানোর জন্য তিনশ কোটি টাকা যেসব রাঘব বোয়াল পকেটে ভরেছেন তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক’। এতে আরও বলা হয়, ‘আমলাতন্ত্র নিপাত যাক, শিক্ষা ক্যাডার মুক্তি পাক। আমার মন্ত্রণালয় আমি চালাবো, আমার দেশ আমি গড়বো।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ জানুয়ারি ফারহানা বিলকিস ফেসবুকে পোস্টটি দেন। ওইদিনই তা নজরে আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের। অভিযোগ তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে ওইদিনই উপসচিব এ জেড এম নুরুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ২৫ জানুয়ারি উপস্থিত হয়ে ফেসবুক পোস্টে দেওয়া বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণ দিতে বলা হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এই উপসচিব জানান, গত বৃহস্পতিবার শুনানি হয়েছে, রবিবার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক ফারহানা বিলকিস বলেন, ‘অভিযোগগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশিত, আমি সেগুলোই পোস্টে লিখেছি। অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই আমার। আমলারা দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তবে কখনও জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আমি জটিলতা তৈরির বিপক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে।’

আগেও মাঠ প্রশাসনের এক কর্মকর্তার ফেসবুক পোস্ট আলোচনায় উঠে আসে। এই পরিস্থিতিতে ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ফেসবুক ব্যবহার সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের দেওয়া ওই নির্দেশনায় বলা হয়, একান্ত ব্যক্তিগত ও কর্মের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন বিষয় নিয়ে ফেসবুকে ছবি ও কনটেন্ট পোস্ট বা শেয়ার করা যাবে না। উদ্ভাবনমূলক ও সরকারি কাজের ইতিবাচক দিক যা অন্যকে উদ্বুদ্ধ করবে, এমন বিষয় প্রশাসনের মাঠ কর্মকর্তারা শেয়ার করতে পারবেন।

এরপর ২০১৬ সালে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ফেসবুক ব্যবহার সংক্রান্ত আরও একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। ওই নির্দেশনায় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনা, কনটেন্ট ব্যবস্থাপনা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্ল্যাটফরম নির্বাচন, পরিহারযোগ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা রয়েছে। ওই নির্দেশনার ভূমিকায় বলা হয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে।

যেসব বিষয় পরিহার করতে বলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে জাতীয় ঐক্য চেতনা পরিপন্থী, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে বা ধর্ম নিরপেক্ষতা পরিপন্থী, রাজনৈতিক মতাদর্শ বা আলোচনা সংক্রান্ত কনটেন্ট, কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রকে হেয় করে এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নৃগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক ও হেয় প্রতিপন্নমূলক কনটেন্ট ব্যবহার।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৭৬৫ বার

Share Button

Callender

April 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930