নিজস্ব রিপোর্টারঃ

ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হলো সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের ‘ফ্যামেলি নাইট’।

প্রশাসনের শীর্ষ স্হানীয় কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এবং ক্লাব সদস্যদের উপস্থিতে বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেটের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।

‘ফ্যমেলি নাইট’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান এনডিসি, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ, বিজিবি সিলেটের সেক্টর কমান্ডার মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম পিএসসি, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমাদুল ইসলাম, সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী দেবজিৎ সিংহ, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিএম, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন আহমদ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আল আজাদ, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এটিএম শোয়েব, সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাাাাজকর্মী পাবেল আহমদ।

বক্তারা সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের চলমান কার্যক্রমের ভূয়সি প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে আস্হা ও বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের আজকের এই “ফ্যামেলি নাইট” আমার জীবনে স্মরনীয় হয়ে থাকবে। কারণ আমি ইতোপূর্বে কখনো দেখিনি কোন অনুষ্ঠানে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এতো কর্মকর্তার একত্রে উপস্থিতি এবং এতো দীর্ঘ অবস্থান। এ থেকে প্রমানিত হয় সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব প্রশাসন সহ সর্বক্ষেত্রে তাঁদের অবস্থান গড়ে তুলেছে। মেয়র বলেন, গণমাধ্যম যতো শক্তিশালী হবে আমাদের কাজ করতে ততো বেশি সুবিধা হবে।

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান এনডিসি বলেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব সিলেটের অনলাইন গণমাধ্যমের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইতোমধ্যে অনলাইন প্রেসক্লাব প্রশাসন সহ সর্বমহলে নিজেদের বিশেষ অবস্থান তৈরী করেছে। করোনাকালে সচেতনতা সৃষ্টিতে অনলাইন প্রেসক্লাব ব্যাপক অবদান রেখেছে এবং এর ধারাবাহিতা চলমান আছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে ভবিষ্যতে অনলাইন গণমাধ্যম টিকে থাকবে। সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব দেশের অন্যান্য এলাকায় অনুকরণীয় হতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনলাইন গণমাধ্যমে বর্তমানে অনেক শিক্ষিত এবং মেধাবী তরুণরা কাজ করছে যার ফলে দিন দিন অনলাইন গণমাধ্যম সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনলাইন গণমাধ্যম এর সাথে পাঠকের একটা সম্পর্ক থাকে এই মিডিয়াতে পাঠক তার অনুভূতি জানাতে পারেন। তিনি বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জাতিকে দিক নির্দেশনা দেয়। আমরা অনলাইন প্রেসক্লাবের কাছে সবসময় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আশা করি।

সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল। ডিজিটাল বাংলাদেশে যতো এগিয়ে যাবে অনলাইন গণমাধ্যম ও ততো এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, যে সকল পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে এবং যারা করেনি তাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমি সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে এটি বলতে পারি সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব সহ যে তিনটি প্রেসক্লাব রয়েছে তারা অসাধারণ। বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে এমনটি লক্ষ্য করা যায় না।

সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী দেবজিত সিংহ বলেছেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের কর্মকান্ডের সাথে জেলা পরিষদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ।এদের মধ্যে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব চমৎকার একটা অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের প্রতিটি অনুষ্ঠান অত্যন্ত সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে। আজকের এই ফ্যামিলি নাইটও এর ব্যতিক্রম নয়। তিনি বলেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব করোনাকালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম দেশের মানুষকে সবার আগে সংবাদ এবং তথ্য প্রদান করছে। যার ফলে অন্যান্য মিডিয়ার সাথে একটা প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই প্রতিযোগিতা সুস্থ হওয়া বাঞ্ছনীয়। অনেকে ফেসবুক লাইভ এবং অনলাইন সাংবাদিকতাকে এক করে ফেলেন যা মোটেই সঠিক নয়। এই জায়গাতে একটা স্পষ্ট বিভাজন থাকা দরকার। তিনি বলেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবকে সিলেট জেলা পুলিশ ওন করে। সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব ইতিমধ্যে সবার কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেছেন, সংবাদ পরিবেশনের সময় তথ্য-উপাত্ত যাচাই করা করে সংবাদ প্রকাশ করলে কোন ধরনের গুজব সৃষ্টি হবার আশঙ্কা থাকে না। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হয় এই গুজবগুলো প্রতিরোধে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেছেন, গুজব প্রতিরোধে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। করোনাকালীন সময়ে যখন প্রিন্ট মিডিয়া বন্ধ ছিল তখন অনলাইন গণমাধ্যম পাঠকের সংবাদ প্রাপ্তির চাহিদা মিটিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনলাইন প্রেসক্লাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমি সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি।

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আল আজাদ বলেন, আমরা যখন ২০১০ সালে সিলেটে অনলাইন গণমাধ্যমের যাত্রা শুরু করেছিলাম তখন অনেকেই নানা কথা বলেছিলেন। আজকে প্রমাণিত হয়েছে অনলাইন গণমাধ্যম একটি অপরিহার্য বিষয়। অনলাইন প্রেসক্লাবের ফ্যামিলি নাইট এটি একটি ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে যেন পুরো সিলেট উঠে এসেছে। কারণ এখানে মেয়র, প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত রয়েছেন। তিনি বলেন, আজ স্পষ্ট হয়েছে অনলাইন গণমাধ্যম এবং ফেইসবুক লাইভ এর ভিন্নতা।

সিলেট চেম্বারের সভাপতি এটিএম শোয়েব বলেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের ফ্যামিলি নাইটের এই চমৎকার অনুষ্ঠানটি সত্যিই অতুলনীয়। এই ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানটি আমরা সিলেট চেম্বারে অনুকরণ করবো।

সিলেট উইমেন্স চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায় বলেন, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের কাছে সিলেট উইমেন্স চেম্বার চির কৃতজ্ঞ। সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব নারী উদ্যোক্তাদের নানাভাবে সাহায্য সহায়তা এবং উৎসাহ প্রদান করে আসছে।

সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আপনাদের প্রত্যাশা পূরণে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব আগামী দিনে কাজ করে যাবে।

সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের কোষাধ্যাক্ষ মেহেদী কাবুল, সহ সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম, ক্লাব সদস্য সাজলু লস্করের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ মকসুদ।

সিলেট মা ও শিশু হাসপাতালের সৌজন্যে অনুষ্ঠিত আর্কষনীয় র‌্যাফেল ড্র এবং এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন, জহিরুল ইসলাম মিশু এবং মাসুদ আহমদ আহমদ রনি।

আভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিয়োগীতার পুরস্কার বিতররণ করা হয় ক্লাব সদস্য সেলিম আহমদের সৌজন্যে।

অতিথিদের আসন ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন, গোলজার আহমদ, আব্দুল মুহিত দিদার, ফাহানা বেগম হেনা।

ফ্যামেলি নাইট অনুষ্ঠানে ক্লাবের সদস্যবৃন্দ এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিলো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে সংগীত পরিবেশন করেন, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী রাজিয়া সুলতানা লাভলী, রানা শেখ ও আর এ রাখি।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টায় ক্লাবের ড. রাগিব আলী মিলনায়তনে বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের রির্পোট পেশ, আয় ব্যয়-এর হিসাব ও শোক প্রস্থাব উপস্থাপন করা হয়।